ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ২ ছাত্রীকে ধর্ষণ, ১ জনের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : প্রেমিক ও তার তিন বন্ধু রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দুই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। পরে ক্ষোভে-লজ্জায় এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।

গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটলেও পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাতে প্রেমিক রতনসহ চার জনকে আসামি করে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। রংপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে। তবে এজাহারে বর্ণিত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি জানিয়েছেন, আসামিদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পল্লির এক ছাত্রী গত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। গত মঙ্গলবার তাকে এবং তার এক বান্ধবীকে ধর্ষণ করা হয়।

ওই ছাত্রীর সহপাঠী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, রংপুরের সদর উপজেলার মাহীগঞ্জ এলাকার ঢোলভাঙা গ্রামের বুধুয়া মিনজির ছেলে রতন মিনজির সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে তাকে দেখা করতে ডাকে রতন। ওই ছাত্রী বিকেলে চাচাত বোন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার কথা বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সরাসরি প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে রংপুর শহরের ঢোলভাঙা গ্রামে আসে। সেখানে রতন ও তার তিন বন্ধু অপেক্ষায় ছিল। এরপর দুই ছাত্রীকে নির্জনস্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে তারা। রাতে আরেক অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তাদের আবার ধর্ষণ করা হয়। পর দিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দুই ছাত্রী বাসায় ফিরে আসে। তখন তারা অসুস্থ থাকলেও ঘটনা কাউকে জানায়নি। এরপর বিকেলে লজ্জা এবং ক্ষোভে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রী আত্মহত্যা করে।

নিহত ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘‘ধর্ষক পক্ষ হুমকি দিচ্ছে- আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিলে ধর্ষণ হওয়া মেয়েটিকেও মেরে ফেলা হবে। এই ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। ধর্ষণের মামলাও করিনি।’’

গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে গেলে অনেকে এ ব্যাপারে কথা বলতে শুরু করে এবং তারা দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর নিহত ছাত্রীর বোন বাদী হয়ে কথিত প্রেমিক রতনসহ চার জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে।

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। তিনি আশা করেন, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। 

মিঠাপুকুর থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, দুটি মেয়েকে দুই স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

আসামিদের ধরতে পুলিশের একটি টিম ঢাকায় রয়েছে বলে জানান তিনি।



রাইজিংবিডি/রংপুর/২৫ এপ্রিল ২০১৯/নজরুল মৃধা/বকুল