ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের সময় হামলা

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ১২ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ০৯:২০, ১২ এপ্রিল ২০২১
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের সময় হামলা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কম দেওয়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থকদের হামলায় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশাসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (১১ এপ্রিল) দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের ডেউয়াতলা বাজারে চাল বিতরণের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

সোমবার (১২ এপ্রিল) মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম হামলার সত‌্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আহতদের মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার রেহেনা বেগম, উপকারভোগী মিঠুরানী, অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূ লিপি আক্তার, ইলিয়াস হাওলাদার, কৃষ্ণ মাস্টার, নাদিরা বেগম, ইসহাক হাওলাদার, ইলিয়াস হাওলাদার, এনায়েত হাওলাদারের নাম পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ লিপি আক্তারসহ গুরুতর আহত ৫ জনকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ডিলার রেহেনা বেগমের স্বামী আরিফুল কবির বাচ্চু জানান, দুপুরে শান্তিপূর্ণভাবে চাল দেওয়া চলছিল। এসময় ইউপি নির্বাচনে জিউধরা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের সমর্থক মাসুদ রানা ও সেলিমের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন অতর্কিত হামলা করে। এতে চেয়ারম্যান, আমার স্ত্রী রেহেনা পারভীনসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।

জিউধরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন,  ‘নিয়ম অনুযায়ী ডিলাররা চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। এর মধ্যে ৪টি বস্তায় ১৩ কেজি চাল কম হয়। উপস্থিত সকলের সঙ্গে কথা বলে ২৮ কেজি ২‘শ ৫০ গ্রাম চাল দেওয়ার কথা জানা যায়। উপকারভোগীরা সামান্য কম নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এভাবে চাল দেওয়া শুরু হলে হঠাৎ করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার রেহেনা পারভীনসহ অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হই। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।’

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ কার্যক্রমের সহকারী ট্যাগ অফিসার ডেউয়াতলা কেসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপ্লব কুমার মিস্ত্রি বলেন, ‘বাজারে একটি কক্ষের মধ্যে আমরা চাল বিতরণ করছিলাম। ২৫-৩০ জনকে চাল দেওয়ার পরে হঠাৎ করে দুইপাশ থেকে কিছু লোক আমাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পরবর্তীতে চাল বিতরণ করা বন্ধ করে দিয়েছি।’

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি এই হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। সরকারি চাল দেওয়ার আগে বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা আপত্তিকর কথা বলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম রেজা, যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজনকে অপমান করেছেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি করে এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।  পরবর্তীতে আমি এসে দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেছি। এই সংঘর্ষে বাবুল খানসহ আমার তিন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন। খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য আমি তাদেরকে নিয়ে রওনা দিয়েছি।’

ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ফের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে। 

টুটুল/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়