ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

গৃহকর্মীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন, আটক ৪

মাওলা সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গৃহকর্মীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন, আটক ৪

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর হাউজিং এলাকায় রাহেলা বেগম (১৯) নামের এক গৃহকর্মীকে বাসায় আটকে রেখে অ্যাসিডে শরীর ঝলসে দেওয়ার পাশাপাশি মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন চালিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচে ফেলে রাখা হয়। পরে তার স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নির্যাতিতার গ্রামের বাড়ি হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের চরনঙ্গলিয়া এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তার প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাহাব উদ্দিন, মিজানুর রহমান সুমন, আলেয়া বেগম ও রীনা আক্তার নামে চারজনকে আটক করেছে।

নির্যাতিতা ও তার পরিবার জানায়, তাদের প্রতিবেশী রিনা আক্তার প্রায় চার মাস আগে তাকে বাসায় কাজ দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদী নিয়ে যায়। এরপর রিনা তার পরিচিত আলেয়া বেগম নামের এক নারীর বাসায় তাকে কাজে দেন। প্রথম মাস মাইজদী নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আলেয়ার বাসা ছিল। সেখান থেকে তিন মাস আগে বাসা পরিবর্তন করে শহরের বালুরমাঠ-সংলগ্ন মাইজদী হাউজিং এস্টেটে একটি নতুন বাসা ভাড়া নেন। সে থেকে গত তিন মাস ভালোভাবেই ওই বাসায় কাজ করেছিলেন রাহেলা। কিন্তু কিছু দিন আগে গৃহকর্ত্রী তাকে বাসায় অসামাজিক কাজ করার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হলে তার ওপর মারাত্মক নির্যাতন চালানো হয়, যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়।

নির্যাতিতা রাহেলা জানান, তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে পুরো শরীরে আঘাত করা হয়। মুখের ভেতর ওপরের পাটির বেশ কয়েকটি দাঁত তুলে ফেলা হয়। তারপরও তিনি অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় গত প্রায় ১০-১২ দিন আগে রাতের বেলায় তার শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। এতে তার বুক, পেট, পিটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে ঝলসে যাওয়া শরীরের অংশ থেকে পঁচন ধরলে তাকে বাসযোগে চট্টগ্রাম নিয়ে কালুরঘাট এলাকার একটি ব্রিজের নিচে ফেলে আসা হয়।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, নির্যতিতার শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে। তা ছাড়া, তার শরীরে অসংখ্য ক্ষত চিহৃ রয়েছে। মুখের ভেতর ওপরের পাটির বেশ কয়েকটি দাঁত নেই। নির্যাতিতার পরিবারের ভাষ্য মতে, তাকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দুই নারীসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।



রাইজিংবিডি/নোয়াখালী/৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/মাওলা সুজন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়