গ্রেনেড হামলায় নিহত ছেলে হত্যার বিচার চায় মা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : ২১ আগষ্ট ২০০৪ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড বোমা ছোঁড়া হয়। নিজের জীবনকে বাজি রেখে গ্রেনেডকে প্রতিহত করে শেখ হাসিনার জীবন বাাঁচিয়েছিল কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের হারুন-অর-রশিদের কৃতি সন্তান মাহাবুবুর রহমান।
গ্রামের পিতা-মাতার চরম আনুগত্যময় সন্তান, দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠা মাহবুব ছিলেন ছেলেবেলা থেকেই সাহসী ও পরোপকারী। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি পায় এবং অবসরে গিয়ে পরবর্তীতে নিযুক্ত হন জননেত্রী শেখ হাসিনার ৪০ জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীর মধ্যে গর্বিত একজন। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত মাহবুব তাঁর দায়িত্ব পালন করে গেছেন একনিষ্ঠভাবে।
মাহাবুবের মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘ফটো তুলে কি হবে এই মাস আসলিই সামবাদিকরা (সাংবাদিক) আইসে আরো জ্বালা বাড়ায় দেয়। কেউ কি আমরা ছেলেকে আইনে দিতি পারবি। যা যাওয়ার তো আমারই গ্যাছে আপনারা কি ফিরি দিতি পারবেন?’
আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। এই সরকারের ১১ বছর চলে যাচ্ছে কিন্তু আমার ছেলে হত্যার বিচার হল না বলে অভিযোগ করেন।
মাহাবুবের বাবা হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই, বিচার হলে আমি মরেও শাান্তি পেতাম। এছাড়া তিনি মাহাবুবের নামে ১টি রাস্তা ও কবরস্থান এর চারপাশ প্রাচীরের দাবী করেন।
মাহবুবের স্ত্রী শামীমা আক্তার আছমা ও তার দুই ছেলে আশিক ও রবিন ঢাকাতে থাকে। প্রথম প্রথম মাহবুবের মা-বাবার সাথে যোগাযোগ রাখলেও এখন আর যোগাযোগ রাখেন না। আশিক বুয়েট থেকে পাশ করেছে ও রবিন ঢাকাতে মেডিক্যালে পড়াশোনা করে।
মাহবুবের পরিবারের হালচিত্রের কথা সর্ম্পকে আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান বলেন, ‘২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মাহাবুব আমাদের গর্ব। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথম থেকে মাহবুবের বাবা-মা, স্ত্রীসহ পরিবারকে দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। তার ছোট ভাইকে উপজেলা পরিষদে চাকরি দেওয়া হয়েছে, বোনকে দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক এর দপ্তরে চাকরি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ও আমরা দলের পক্ষ থেকে তার পরিবার সাহায্য করে যাচ্ছি।তাছাড়া এ ধারা চলমান থাকবে। তার নামে একটি রাস্তা করার প্রক্রিয়া চলছে। ২১ আগষ্ট উপলক্ষ্যে দলের পক্ষ থেকে উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল এবং কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে নব যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাঈদ মোমেন মজুমজার বলেন, ‘২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিজের জীবন দিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করে যে অবদান রেখেছে আমরা তা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি।জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে ও উপজেলা চেয়ারম্যান এর সাথে পরামর্শ করে তার পরিবারের জন্য সরকারি ভাবে যতটুকু সহযোগিতা করার করব এবং সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/২১ আগস্ট ২০১৯/কাঞ্চন কুমার/জেনিস
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন