চিনাইবিলের চা শিশুদের ভরসা ‘মনোবল পাঠশালা’

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ চা বাগানের চিনাইবিল ডিভিশনে কোন সরকারি স্কুল নেই। প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত এখানের চা শ্রমিকদের সন্তানেরা।

তাই স্থানীয় ‘ব্যতিক্রম চা ছাত্র যুব সংগঠন’ এর উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ‘মনোবল পাঠশালা’। চা বাগান শ্রমিকদের সন্তানেরা এ স্কুলে লেখাপড়া করে আলোকিত হচ্ছে ।

এই যুব সংগঠনের সভাপতি রনি গোয়ালা বলেন, ‘লালচান্দ চা বাগান চিনাইবিল ডিভিশনে প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষালাভের জন্য অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয় কোমলমতি চা শ্রমিক সন্তানদের। যদিও গত কয়েক বছর ধরে এনজিও ব্র্যাকের উদ্যোগে স্কুল চালু হয়। এ স্কুলে চা শ্রমিক সন্তানেরা প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করতে পেরেছে। বর্তমানে ব্র্যাক প্রাথমিক শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়ায় বাইরে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রায় ২৭ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ে। এমতাবস্থায় আমার এই উদ্যোগ।’

ঝরে পড়া  চা শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য, ‘ঝরে পড়তে দেবোনা গড়ে তুলবো আমরা’ এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে চলতি বছরের ৩ মার্চ চালু করা হয় ‘মনোবল পাঠশালা’।

চিনাইবিলের দূর্গামন্দিরের গ্রিনঘরে এ পাঠশালায় ২৭ জন শিক্ষার্থী ২য় শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংগঠনের সদস্য শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের বিএ ফাইনাল বর্ষের অধ্যয়নরত দিপালী গোয়ালাকে। সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে মাসে মাত্র ১২শ টাকা সম্মানী দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষিকা দিপালী গোয়ালা বলেন, ‘ঝরে পড়া রোধ করে শিক্ষার আলো বিস্তার করার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ‘মনোবল পাঠশালা’। এখানে শিশুরা লেখাপড়া করছে। তাদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা চেষ্টা করছি।’

জয় সাঁওতাল, পরাধীন সাঁওতাল, সৌরভ রায়, নিশান বাকতি এরা জানালো, এ স্কুলে তারা বিনা বেতনে লেখাপড়া করতে পারছে। এতে তারা আনন্দিত। তারা সুশিক্ষা গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চায়।

সূত্র জানায়, লালচান্দ চা বাগানে সরকারিভাবে শাহজিবাজার টিলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। চিনাইবিল থেকে এ স্কুলের দুরত্ব প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার। তাই চিনাইবিলের শিশুদের জন্য এখন শিক্ষা গ্রহণের ভরসা এই ‘মনোবল পাঠশালা’।

 

হবিগঞ্জ/ মামুন/টিপু