ছাত্রদলের কাউন্সিল নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক
আরিফ সাওন: ছাত্রদলের ষষ্ঠ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল আদালতের আদেশে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। তবে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাউন্সিল করতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। এর জন্য দফায় দফায় বৈঠক করছেন দলটির নীতি নির্ধারক ও ছাত্রদলের কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে তারা সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন।
এদিকে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভোটের সমীকরণ পাল্টে যাচ্ছে। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও গুজব ছড়িয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের বিরুদ্ধে অন্য বলয়গুলো একাট্টা হয়ে কাজ করছে। কাউন্সিল আটকানোর জন্য মামলা করা ছাত্রদলের ধর্ম বিষয়ক সাবেক সহ-সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে গুঞ্জন তৈরি করছেন নির্বাচনী প্রতিপক্ষ নেতাকর্মীরা।
একইভাবে সভাপতি পদে আলোচনায় থাকা ফজলুর রহমান খোকন বিগত দিনে আন্দোলন কিংবা কর্মসূচির কোথাও ছিলেন না বলে প্রচার করা হচ্ছে। এই দু’জনের পাশাপাশি এ পদে আরও আলোচনায় রয়েছেন হাফিজুর রহমান।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীদের দৌড়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ কারীমুল হাই (নাঈম)। তিনি বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুনের সরাসরি অনুসারী। মামুনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে ভোটের মাঠে ফ্যাক্টর হয়ে উঠছেন তিনি। নিজের অবস্থানকে জানান দিতে গত বৃহস্পতিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের কার্ড সংগ্রহ করার সময় বড় শোডাউন করেন নাঈমের অনুসারীরা।
নেতাকর্মীরা জানান, ছাত্রদলের সাবেক নেতা মামুনুর রশিদ মামুনের সঙ্গে সারাদেশের কাউন্সিলরদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। জেলা পর্যায়ের কমিটি গঠনের সঙ্গে জড়িত থাকায় এসব কমিটিতে তার অনুসারীরাও রয়েছেন। অন্যদিকে নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে কমিটি গঠনে একক আধিপত্য রাখায় এ অঞ্চলের ভোটে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। এর ফলে অঞ্চল ভিত্তিতে ওই অঞ্চলের অপর প্রার্থী শাহ নাওয়াজ ভোটের সমীকরণে কিছুটা পিছিয়ে পরতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের আরেক শক্তিশালী প্রার্থী ডালিয়া রহমানও ভালো ভোট পেতে পারেন। এতে তিন প্রার্থীর মধ্যে নাঈম এগিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা তার সমর্থকদের।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থীদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম আমিন, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ইকবাল হোসেন শ্যামল ও তানজিল হাসানের সঙ্গে ভোটের প্রতিযোগিতায় কারীমুল হাই নাঈম চলে আসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সাধারণ সম্পাদক পদের দৌঁড়ে কে যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন বা কার সম্ভাবনা বেশি সে ব্যাপারে কেউই ধারণা করতে পারছেন না।
শ্রাবণ বলেন, আমি ভোটের মাঠে একজন প্রার্থী। অন্য যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা আমার সহযোদ্ধা ও বন্ধু। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চললেও আমি এতে আহত হই না। সবাইকে নিয়ে কাজ করার পক্ষে আমি। কাউন্সিলররা যোগ্য প্রার্থী দেখেই ভোট দেবেন। আমি তাদেরকে সম্মান জানাতে চাই।
ফজলুর রহমান খোকন বলেন, ‘আমি সারাদেশ সফর করে ভালো সাড়া পেয়েছি। আশা করছি-ভোটাররা অমাকে ভোট দিয়ে তাদের পাশে রাখবেন।’
কারীমুল হাই নাঈম বলেন, ‘আমি সারাদেশ সফর করে তৃণমূল নেতাকর্মী আর ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের চাওয়া পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে আগামী দিনে পথ চলতে চাই।’
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রদলের একজন কর্মী হিসেবে আমি সবার কাছে গিয়েছি। আগামীতেও তাদের পাশে এভাবেই থাকতে চাই।’
সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আর গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব চায় ভোটাররা। আগামীতে তাদের সেই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে বলে আমি মনে করছি।’
ডালিয়া রহমান বলেন, ‘আমি এই পদে একমাত্র নারী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। নতুন কোনো রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে।’
তানজিল হাসান বলেন, ‘ছাত্রদলের রাজনীতিতে এসে আমি অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমি আমার ত্যাগের মূল্যায়ন পাবো বলে আশা রাখি।’
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/সাওন/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন