ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জরাজীর্ণ সেতু: ২০ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ (ভিডিও)

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫১, ৩ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
জরাজীর্ণ সেতু: ২০ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষের দুর্ভোগ (ভিডিও)

প্রায় ৩০ বছর আগে গোপালগঞ্জ সদর ও কাশিয়ানী উপজেলার জদুপুর খালের ওপর একটি লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। আশপাশের ২০টি গ্রামের কয়েক লাখ মানুষের যাতায়াত সেতুটির ওপর দিয়ে।

সময়ের সাথে সাথে সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। মেরামতের অভাবে প্রায় ১০ বছর আগে সেতুটি ব‌্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তারপরও এই সেতুটি দিয়েই পারাপার করেন ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক, ব‌্যবসায়ীসহ ২০টি গ্রামের কয়েকলাখ মানুষ।

জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় পারাপারে সময় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রোগীসহ যাতায়াতকারীরা। সেই সাথে কৃষি পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষকেরা।

শুক্রবার (৩ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেলো, সেতুটি সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতুটি ওপর বাঁশ দিয়ে সদর উপজেলার কলপুর, বৌলতলী, জদুপুর, দেবাসুর ও কাশিযানী উপজেলার পুইশুর, সিংগাসহ ২০টি গ্রামের মানুষেরা কোনো রকমে যাতায়াত করছে।

সেতুটির দুপাশে চারটি প্রাইমারি, দুটি হাই স্কুল, তিনটি মাদ্রাসা এবং একটি কলেজ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে ব‌্যববহারের অনুপযোগী হওয়ার পরও বাধ‌্য হয়ে শিক্ষার্থীদের এটি ব‌্যবহার করতে হয়। বিকল্প পথ হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলা শহর ও কাশিয়ানী উপজেলা সদরে ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। এতে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হয়, তেমনি খরচও বাড়ে।

শুধু যাতায়াতই নয়, এ সেতুর চারপাশের গ্রামগুলোতে প্রচুর কৃষি পণ্য উৎপাদন হয়। সেতুর কারণে পরিবহন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। বিকল্প পথে পণ‌্য বাজারে নিতে অধিক খরচ হচ্ছে তাদের। ফলে কৃষকদের পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অন‌্য এলাকার কৃষকদের তুলনায় তাদের মুনাফা কম হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এসব এলাকার রোগী পরিবহনে মারাত্মক সমস‌্যা হয়। গর্ভবতী নারী এবং রোগীদের হাসপাতালে আনা-নেওয়ায় চরম সমস‌্যার মুখে পড়তে হয় ওই এলাকার মানুষের।

ওই এলকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সালাউদ্দিন কাজী, ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ইয়াছিন কাজীসনহ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইন্টার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজ উদ্দিন জানান, স্কুল ও কলেজসহ বিভিন্ন কাজে যাতায়ের জন্য ভেঙ্গে যাওয়া লোহার সেতুটি ব্যবহার করতে হয় তাদের। পারাপার হতে গিয়ে অনেক সময় খালের পানিতে পড়ে যায় অনেকে। এতে বই-খাতা, জামা কাপড় নষ্ট হয়।

এলাকাবাসী মো. নিয়ামুল ইসলাম নাঈম ও মো. আরাফাত হোসেন বলেন, ‘সেতুটি এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাঁশ দিয়ে কোনো রকমে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ভ্যান-রিক্সাসহ অন্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। রোগীদের পারাপার করা সম্ভব না হওয়ায় সময় মতো হাসপাতালে নেওয় যায় না। মানুষের ভোগান্তি কমাতে দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।’

বৌলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার‌ম্যান সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে সেতুটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে রয়েছে। এখানে একটি সেতুটি নির্মাণ করা হলে একটি দিকে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে অন্য দিকে কৃষকেরা তাদের ফসল কম খরচে ঘরে তোলাসহ বাজারে নিতে পারবেন।’

গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহছানুল হক বলেন, ‘সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষাসহ দ্রুত প্রকল্প তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সেতুটি পুনঃনির্মাণ হলে এসব এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।’




গোপালগঞ্জ/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়