ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জ্বলছে সৌরবাতি, পাল্টে গেছে গ্রামীণ জনপদ

রফিক সরকার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৩১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জ্বলছে সৌরবাতি, পাল্টে গেছে গ্রামীণ জনপদ

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ জনপদ সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত।

জলবিদ্যুতের ওপর চাপ কমাতে উপজেলার হাট-বাজার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পার্শ্বে স্থাপন করা হয়েছে এসব স্ট্রিট লাইট নামক সৌরবাতি। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠছে এসব বাতি। এতে করে চাপ কমছে জলবিদ্যুতের।

লোড শেডিংয়ের ঝামেলা না থাকায় এ সড়কবাতিগুলো একটানা আলো দেয় সারারাত। এ আলোর ফলে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই আগের তুলনায় কমেছে অনেক। পাল্টে গেছে উপজেলার গ্রামীণ জীবনমান। গ্রামের মানুষের জীবনেও শহরের পরিবেশের ছোঁয়া লেগেছে।

জানা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি টিআর ও কাবিটার আওতায় উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও নির্জন অন্ধকার সড়কে সৌরবিদ্যুতের (স্ট্রিট লাইট) সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১ম ও ২য় পর্যায়ে মোট ৪১৭ প্রকল্পের মাধ্যমে ২৮৯ সড়ক বাতি স্থাপন করা হয়।

এছাড়া একই প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজসহ দুঃস্থ পরিবারে ১৩৮ সোলার হোম সিস্টেম লাগানো হয়েছে। এতে ২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৩৩ টাকা ব্যয় হয়েছে। আগের বছরও বিভিন্ন স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দিরে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে স্ট্রিট লাইট নামক সৌরবাতি।

চলতি অর্থবছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো সোলার বাতি বসানোর স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে। শেখ হাসিনার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার কালীগঞ্জে বাস্তব রূপ লাভ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়েছে এসব সৌরবাতি । সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিগুলো জ্বলছে। আবার সকালের আলো ফোটার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ভাদার্ত্তী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের রফিজ উদ্দিন, মিলন মিয়া, কাদির মিয়া, সেলিম মিয়া, লাল মিয়াসহ ওই গ্রামের লোকজন রাইজিংবিডিকে জানান, আমাদের দেশে শহরে রাস্তায় বাতি দেওয়া হয়। গ্রামের মানুষ যে এই সুবিধা পাবে আমরা কল্পনা ও করিনি। কিন্তু এখন সৌরবিদ্যুতের কল্যাণে আমাদের গ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অন্ধকার সড়কে আলো জ্বলছে। পাল্টে গেছে গ্রামের মানুষের জীবনমান। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও অনেক কমে এসেছে। আগে অন্ধকার রাস্তায় চলাচল করতে ভয় পেতাম। এখন রাস্তায় সৌর বাতি সারারাত জ্বলে। ফলে অন্ধকার রাস্তায় চলতে কারো মনে তেমন কোন ভয়-আতঙ্ক নেই। গ্রাম আর গ্রাম নাই, মনে হয় যেন শহরেই থাকি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শিবলী সাদিক রাইজিংবিডিকে বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ওই মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি সরকারের সকল বরাদ্দে সর্বোচ্চ জনস্বার্থ নিশ্চিতে বদ্ধ পরিকর। তাই তিনি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৌর বিদ্যুতের বাতি বসানো নির্দেশ দেন। গ্রামের মানুষ এতোদিন সড়ক বাতির সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। সন্ধ্যা হলেই গ্রাম গুলো ভুতুরে পরিবেশ তৈরি হতো। রাস্তায় আতঙ্কে মানুষ চলাফেরা করতে পারতো না। সৌর বাতি বসানোর ফলে রাতের আঁধারে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারছে। এতে গ্রামের মানুষের জীবনে ও শহরের ছোঁয়া লেগেছে।

 

কালীগঞ্জ/রফিক/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়