ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী ছাড়াই চলছে করোনার চিকিৎসা

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২১ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টাঙ্গাইলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী ছাড়াই চলছে করোনার চিকিৎসা

টাঙ্গাইলে মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১২ জন। এসব আক্রান্তের মধ্যে চার জনকে চিকিৎসা দেওয়া দেয়া হচ্ছে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে করা করোনা ইউনিটে।

তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশন বা আইসিইউ নেই এই করোনা ইউনিটে। তবুও চার জনের চিকিৎসা চলছে।

বাকিদের পাঠানো হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকার পরও আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়াটা যেন ঢাল-তলোয়ার ছাড়া যুদ্ধ করারই মতো।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জেলায় চিকিৎসা দেওয়া চার করোনা আক্রন্ত ব‌্যক্তি এখনও সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। তাই তাদের এখানেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা পাঠানোর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সদর উদ্দিন বলেন, ‘‘জেলা পর্যায়ে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। তাই বাধ্য হয়ে আমরা ভেন্টিলেটর ছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিচ্ছি। তাছাড়া তাদের শারীরিক অবস্থাও অনেক ভালো। যার জন্য তাদের কোনো ভেন্টিলেটর চিকিৎসার প্রয়োজন হচ্ছে না। তবে তাদের অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা আছে। তাছাড়া আমাদের চিকিৎসক-নার্সদের জন্যও আলাদা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। আস্তে আস্তে সব সুবিধাই এই ইউনিটে আনা হবে।

‘শেখ হাসিনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে করা করোনা ইউনিটে ৫০টি বেড রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে আরও ৫৮টি আইসোলেশন বেড রয়েছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার রয়েছেন ২৪২ জন, নার্স রয়েছেন ৪১৯ জন, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সমগ্রী পিপিই মজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত। এছাড়াও করোনা আক্রান্ত রোগীদের আনা নেওয়া করার জন্য দুটি অ‌্যাম্বুলেন্স ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো ভেন্টিলেটর সুবিধা সংযুক্ত আইসিইউ নেই।”

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের তিনটি গ্রুপ ভাগ করে শিফটিং করা করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপের চিকিৎসকরা সাত দিন করে রোগীদের সেবা দেবেন। তারপর তারা ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে যাবেন।’

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৮৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় এনেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে বর্তমানে জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংখ্যা এক হাজার ৯১১ জন।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। এর মধ্যে নাগরপুরের একজন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে।

জেলা থেকে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৭৬১ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিলো। এদের মধ্যে ১২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে নাগরপুরে চার জন, ভূঞাপুরে পাঁচ জন, মির্জাপুরে এক জন, ঘাটাইলে এক জন ও মধুপুরে এক জন রয়েছে।

এছাড়া জেলায় মোট হোম কোয়ারেন্টাইনে আনা হয় চার হাজার ২১২ জনকে। এদের মধ্যে নির্দিষ্ট ১৪ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় দুই হাজার ৩০১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এক হাজার ৯১১ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৪ জন।


সিফাত/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়