ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

টিলা ধসে হুমকিতে সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লী

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ২৯ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টিলা ধসে হুমকিতে সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লী

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : টানা বৃষ্টিপাতে টিলা ধসে হুমকিতে ত্রিপুরা পল্লী।অন্যদিকে টিলা ধসের কারণে দীর্ঘদিনের আপন ভিটা ছাড়তে হচ্ছে আদিবাসীদের ।  এ নিয়ে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দারা।

চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্তরঞ্জন দেববর্মা অভিযোগ করে বলেন, ‘পাহাড়ে আমাদের জন্ম। মৃত্যুও যেন এখানেই হয়। এ স্থানটা আমাদের কাছে প্রিয়। পাহাড় রক্ষায় আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা।’

টানা বৃষ্টিপাতে টিলা ধসে ছড়ায় পড়ছে কাদের দোষে? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ আমরা টিলা কাটি না। টিলা রক্ষায় কাজ করি। তবে টিলা কাটা চক্রের কাছে আমরা অসহায়। জন্মের পর ছড়াগুলো দেখলাম ছোটিএখন দিন দিন বড় হচ্ছে । বাকি দিনে কি হবে, জানিনা। আমাদের বসবাস পাহাড়ের টিলার ওপরে। টিলায় বসবাস নিরাপদ মনে করি। আর সবাই মিলেমিশে একত্রে থাকি।  আমাদের পূর্ব পুরুষরা  নির্জন পাহাড় টিলায় বাস করে গেছেন।’

চিত্তরঞ্জন দেববর্মা বলেন, দেশ স্বাধীনের পর সরকারি সিদ্ধান্তে বনবিভাগ আমাদেরকে বনের এক পাশে অবস্থিত সড়কপথের কাছের টিলায় বসবাসের ঠিকানা করে দেয়।  সেই থেকে এখানে বসবাস করছি। কিন্তু এই টিলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়া থেকে বিভিন্ন চক্র  নানা সময়ে বালু উত্তোলন করছে। তাই আজ টিলা ধসের কারণ হয়ে উঠেছে। একদিকে ছড়া হচ্ছে প্রশস্ত। অন্যদিকে টিলা হচ্ছে সংকীর্ণ। তার সাথে আমাদের বসবাস হয়ে পড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ।

তিনি জানান, টানা বৃষ্টিপাতে পল্লীর টিলা ধসে এ মৌসুমেও তিন আদিবাসী পরিবারকে আপন ভিটা ছাড়তে হয়েছে।  তাদের এ টিলার অন্যত্র এসে বসত করতে হচ্ছে। 

উদ্যানের অন্যান্য ছড়ায়ও টিলা ধসে পড়ছে এবং টিলার সাথে অনেক প্রাচীন গাছও ভেঙ্গে পড়ছে বলে জানান তিনি।  

তিনি আরো জানান, এ টিলা রক্ষায় প্রাচীর নির্মাণে উপজেলা প্রশাসন থেকে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ হবে বলে শুনেছেন। তবে টিলা রক্ষা করতে হলে বড় আকারের বাজেট দরকার।

তিনি বলেন, ‘রক্ষা প্রাচীর ভালভাবে হলে  আমরাও মনে স্বস্তি নিয়ে টিলায় বসবাস করতে পারব।’

উদ্যানের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ছোট ছোট টিলা ধসে পড়েছে। গোড়ার মাটি সরে গিয়ে অনেক বৃক্ষ ভেঙ্গে পড়ছে। সাতছড়ি এলাকার ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানালেন, ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এ উদ্যানটি বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ এখানে যাতায়াত সহজ। রয়েছে বন্যপ্রাণির বিচরণ । ছায়া বৃক্ষের চির সবুজও মুগ্ধ করছে তাদের ।



রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২৯ জুন ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়