ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনে নতুন ভোটাররাই ফ্যাক্টর!

তানভীর হাসান তানু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনে নতুন ভোটাররাই ফ্যাক্টর!

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা: ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩টি সংসদীয় আসনে এবার যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯১ জন নতুন ভোটার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন ভোটাররাই ফ্যাক্টর মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৯৮৪ সালে বৃহত্তর দিনাজপুর জেলাকে ভেঙ্গে তিনটি জেলা করা হয়। এর মধ্যে পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের মাঝখানে ঠাকুরগাঁও জেলা। এ জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ। আয়তন প্রায় ১ হাজার ৬শ’ বর্গমাইল। জেলায় মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭৫ ভাগ মুসলমান, হিন্দু শতকরা ২৪ ভাগ এবং খ্রিষ্টান, আদিবাসী ও অন্যান্য জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার শতকরা এক ভাগ।

ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৬ জন। ৩টি আসনেই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে নতুন ভোটারদের একটা বড় ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন ভোটারের মধ্যে ৯০ ভাগ তরুণ-তরুণী। যারা এর আগে ভোটার হতে পারেননি বা জেলার বাইরে ছিলেন, বাকি ১০ ভাগ তারা।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ টি আসনে মোট ভোটার ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৬ জন। দশম সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৮ লাখ ৫১ হাজার ৯৬০জন। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯১ জন। জেলায় নারী ভোটার ৪ লাখ ৯২ হাজার ৪৭৬ জন এবং পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ২ হাজার ৭০০ জন।

নবম সংসদ নির্বাচনের (২০০৮) ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও ৩ টি আসনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান অনেক বেশি ছিল। এ আসনগুলোতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২টি আসনে ও মহাজোটের প্রার্থী ১টি আসনে বিজয়ী হন। নিকটতম প্রার্থী ছিলেন ঠাকুরগাঁও-১ ও৩ আসনে বিএনপি ও অপরটিতে জামায়াত।

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে নতুন ভোটার হয়েছেন ৫২ হাজার ৮৪৯জন । বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ভোট ব্যবধান ছিল ৫৬ হাজার ৬৯০ জন।

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে নতুন ভোটার হয়েছেন সাড়ে ৫৫ হাজার ৯৮। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল ৪ হাজার ৩৭৭ জন।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে নতুন ভোটার হয়েছে ৪৫ হাজার ১৪৪ জন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ভোট ব্যবধান ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৬২ জন।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনে ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনে জয়-পরাজয়ের অন্যতম ভূমিকা রাখবেন এই নতুন ভোটাররা।

অপরদিকে নতুন ভোটাররা বলছেন, শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণদের সুযোগদানে সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি ও সার্বিক উন্নয়নের দিক বিবেচনায় নিয়ে ভোট দেবেন তারা।

নতুন ভোটারদের একজন কলেজছাত্রী নুরুন নাহার। তিনি পৌর শহরের বাসিন্দা, পড়াশোনা করছেন ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এলাকাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে যিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবেন, সমাজে নারীদের নিয়ে যিনি বেশি বেশি চিন্তা করে এগিয়ে আসবেন, তাকেই বেছে নেবেন নতুন ভোটাররা।’

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজরে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন মিরাজুল ইসলাম। তিনি সদর উপজেলার নারগুন এলাকার বাসিন্দা। এবারই নতুন ভোটার হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে শুধু মুখের বুলি নয়, যিনি সত্যিকার অর্থে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে কাজ করবেন, তার দিকেই নতুন ভোটাররা ছুটবেন।’

ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক কুরাইশী বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে ঢাকার সাথে সরাসরি আন্ত:নগর ট্রেন চালু হয়েছে। শহরের রাস্তা চার লেন হয়েছে। গ্রামের বেশির ভাগ রাস্তা পাকা করণ, স্কুল-কলেজে নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এসব চিত্র তুলে ধরা হবে।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই বললেই চলে। বর্তমান সরকার আমলের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হবে।




রাইজিংবিডি/ঠাকুরগাঁও/২৪ নভেম্বর ২০১৮/তানভীর হাসান তানু/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়