ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ঢাকা-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং: শিগগিরই সরাসরি বাস

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৯, ১৪ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাকা-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং: শিগগিরই সরাসরি বাস

সরাসরি ঢাকা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে স্থাপিত হতে যাচ্ছে বাস যোগাযোগ। এরই মধ্যে বাস রুট চালুর ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। বায়লেট্ররেল চুক্তির পর চালু হবে এই সার্ভিস। এতে সরাসরি এক বাসেই ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং যাওয়া যাবে। সীমান্তে যাত্রীদের আর বাস পরিবর্তন করতে হবে না।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক বৈঠকে আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তের আওতায় এরই মধ্যে এই বাস রুট চালুর বিষয়ে সফল ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই বাস রুট চালুর আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কলকাতা-ঢাকা বাস চালু হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। এছাড়া আগরতলা-ঢাকা বাস চালু হয় ২০০৩ সালে। দুটো রুটেই যাত্রীদের বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা ছিল উভয় দেশেরই। যদিও ঢাকায় বাস বদল না করেই যাতে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে ত্রিপুরার আগরতলায় যাওয়া যায়। ভারতের মূল ভূখণ্ড দিয়ে সড়কপথে কলকাতা থেকে আগরতলা যেতে গেলে প্রায় তিন দিনের মতো সময় লাগে। ঢাকা হয়ে যেতে পারলে ভ্রমণের সময় নেমে আসবে চব্বিশ ঘণ্টা। কিন্তু এজন্য বাংলাদেশকে নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিতে হবে ভারতীয় বাসকে। এই ট্রানজিটের দাবিটি এতদিন আটকে ছিল কূটনীতির জটে। অবশেষে এখন তা খুলতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. এহছানে এলাহী রাইজিংবিডিকে বলেন, ঢাকা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে সরাসরি বাস রুট চালুর বিষয়ে ইতিমধ্যে সফল ট্রায়াল রান সম্পন্ন করেছি। বায়লেট্রারেল চুক্তির পর এই বাস যোগাযোগ সার্ভিস চালু হবে।

তিনি বলেন, চার দেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) চুক্তি হয়। কিন্তু ভুটান চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিষয়টি গতি পাচ্ছে না। এই চুক্তি থেকে ভুটানকে বাদ রেখে বাস সার্ভিস চালু করতে চাই, অর্থাৎ বিআইএন হিসেবে সিদ্ধান্ত নিলে আমরা এখনই ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি বাস সার্ভিস চালু করতে পারি। কিন্তু আমরা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় এই সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে এই বাস রুট চালু করা যাবে।

ঢাকা-শিলিগুড়ি-গ্যাংটক (সিকিম)-ঢাকা এবং ঢাকা-শিলিগুড়ি-দার্জিলিং-ঢাকা রুটে পরীক্ষামূলক বাস চালুর পরিকল্পনা করেছে দুই দেশ। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সড়ক পথে ইতিমধ্যে যোগাযোগ থাকলেও সরাসরি যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই, সীমান্তে পৌঁছে বাস পরিবর্তন করতে হয় যাত্রীদের। তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যাত্রীদের সীমান্তে বাস পরিবর্তন করতে হবে না। এ বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে ভারত সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। এরপর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ট্রায়াল রান হতে পারে।

এদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ‌্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ থেকে সড়কপথে এক বাসেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে সরাসরি এ বাস সেবা চালু হচ্ছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে বিআরটিসি সচিব মোহম্মদ সাইদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, যেহেতু বিষয়টি এখনো ট্রায়াল রান পর্যায়ে রয়েছে, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়া এই বাস রুট এখনই চালু হচ্ছে না। তবে আমরা আশা করছি, স্বল্প সময়ের মধ্যে এই রুট চালু করা যাবে।

জানা গেছে, অন্তত আরো চারটি নতুন বাস রুট চালুর বিষয়ে বাংলাদশ ও ভারত সরকার ঐক্যমতে পৌঁছেছে। এগুলো হচ্ছে- কলকাতা টু চট্টগ্রাম, শিলং টু চট্টগ্রাম, খুলনা টু কলকাতা এবং যশোর টু কলকাতা। এর আগে ঢাকা থেকে সিলেটের তামাবিল ও ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী শিলং হয়ে আসামের গৌহাটি পর্যন্ত পরীক্ষামূলক বাস চলাচল শুরু হয় ২০১৫ সালের মে মাসে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৫ জুন বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল মোটরযান চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চার দেশের মধ্যে অবাধ পণ্য ও যাত্রী সেবার লক্ষ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ভুটান চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তা থমকে যায়। গত বছর নয়াদিল্লি সফরে গিয়ে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক মোটরযান চুক্তি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ভুটানকে বাদ রেখে আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচি নিয়ে কাজ করতে একমত হয়েছে বাকি তিন দেশ।

 

ঢাকা/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়