ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঢাবির দুই ছাত্রকে পিটিয়ে হল ছাড়া করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাবির দুই ছাত্রকে পিটিয়ে হল ছাড়া করার অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হল ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সাও কেড়ে নেয়ার অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে হল ছাড়া করা শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন, তাই তাদের সতর্ক করা হয়েছে- দাবি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের।

রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে এই ঘটনা ঘটে। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান। তবে মারধরের কথা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত হল ছাত্রলীগের নেতারা।

অভিযোগ ‍উঠেছে, হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা আবছার হাসান রানা ও মুহাম্মাদ জিসানের নেতৃত্বে দুই শিক্ষার্থীকে প্রথমে মারধর ও পরে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।

জানা গেছে, আবছার এফ আর হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ছাত্রলীগের মারধরের শিকার ওই দুই শিক্ষার্থীর নাম রাকিবুল হাসান ও সুমন। রাকিব দ্বিতীয় বর্ষে ও সুমন প্রথম বর্ষে পড়েন। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা এখন হলের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হল সূত্রে জানা যায়, সুমন ১১১ নম্বর ও রাকিব ১১৩ নম্বর কক্ষে থাকেন। রাতে সুমন তার কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন। তখন ছাত্রলীগ নেতা জিসান তাকে ঘুম থেকে তুলে হলের তিন তলায় নিয়ে যান। সেখানে আবছারের নেতৃত্বে তাকে একদফা মারধর করা হয়। তারপর গেস্টরুম ও হল সংসদের কক্ষে নিয়ে আরেক দফা মারধর করেন। একইভাবে রাকিবকেও ডেকে নেওয়া হয়। হল শাখা ছাত্রলীগের আফসার হাসান রানার নেতৃত্বে জহির, জুয়েল ও লাভলু তাদেরকে প্রথমে মারধর করেন তারপর রড-স্ট্যাম দিয়ে ভয়ভীতি দেখান।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আমার এবং সুমনের সাথে ডাকসুর জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিকের ছবি ছিল। সেকারণে আমাদের সন্দেহ করে এবং ভোর ৫টায় আমাদেরকে ঘুম থেকে তুলে হল অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে হল শাখা ছাত্রলীগ এবং হল সংসদের অনেকেই ছিল। তারা আমাদের রড-স্ট্যাম্প দিয়ে ভয় দেখায় এবং হল থেকে বের করে দেয়। যদি সামনে হল কমিটি না থাকতো, তাহলে নামাজ পড়ার কারণে আমাদের শিবির ব্লেইম দিয়ে মারা হতো।’

তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে বিভিন্ন সময় লেখালেখি করি। নিরপেক্ষ থেকে লেখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে তা সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের বিপক্ষে চলে যায়। তাই আমাকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।’

মারধরের শিকার শিক্ষার্থী সুমন বলেন, ‘আমার মানিব্যাগে সাড়ে তিন হাজার টাকা ছিল। আবছার ভাই, আমার মানিব্যাগ সার্চ করার নামে তিন হাজার টাকা নিয়ে নেন।’

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা আবছার হোসেন রানা। তিনি বলেন, ‘তারা (রাকিব ও সুমন) দুজনে একটা মিটিং করছিল। আমরা গিয়ে খোঁজ নিই।’

টাকা রেখে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কেন ওদের মানিব্যাগ খোঁজ করতে যাবো? আমরা কোনো টাকা নেইনি।’

স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমি এরকম কোনো অভিযোগ পাইনি। এ ব‌্যাপারে প্রাধ্যক্ষ বা অন্য কোনো আবাসিক শিক্ষকের সাথে কথা বলা যেতে পারে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটা হলের ভেতরের ঘটনা। হল প্রশাসন দেখবে। তারা যদি কোনো সাহায্য চায়, তাহলে আমরা করব।’


ঢাকা/ইয়ামিন/সাইফ/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়