তিন আসনেই খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল

বগুড়া প্রতিনিধি ও ফেনী সংবাদদাতা : বগুড়ার দুটি সংসদীয় আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

এর আগে ফেনী-১ আসনেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এখন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আর প্রার্থী থাকলেন না।

খালেদা জিয়া ছাড়াও বগুড়ার সাতটি আসনে হিরো আলমসহ ২৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

রোববার যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়নপত্রগুলো বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এক শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না থাকা, কয়েকজন প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান কিংবা পৌর মেয়রের পদ না ছাড়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

দুটি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার কথা উল্লেখ করে ফেনীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ উজ জামান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।

বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, বগুড়া-১ আসনে ঋণখেলাপি হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী টিপু সুলতান এবং এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান মিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

বগুড়া-২ আসনে দুই জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। অসত্য তথ্য থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেম ফকির এবং আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না থাকায় আরেক প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

বগুড়া-৩ আসনে বাতিল হয়েছে দুই জনের মনোনয়নপত্র। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করায় বিএনপির আবদুল মোহিত তালুকদার ও এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী তাজ উদ্দিন মন্ডলের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে ছয় জনের। দলের নিবন্ধন না থাকায় ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের অধ্যাপক জাহিদুর রহমান, দলীয় মনোনয়নের চিঠি না থাকায় আওয়ামী লীগের আ ন ম আহছানুল হক ও কামাল উদ্দিন কবিরাজ, এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম ও ইউনুস আলী, উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করায় জামায়াত নেতা তায়েব আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

বগুড়া-৫ আসনে বাতিল ঘোষিত হয়েছে তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করায় জামায়াত নেতা দবিবুর রহমান, ঋণখেলাপি থাকায় বিকল্পধারার প্রার্থী মাহবুব আলী এবং এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা জামান হিমিকার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

বগুড়া-৬ আসনে বেগম খালেদা জিয়াসহ তিন জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। দুই বছরের বেশি দণ্ড থাকায় এই আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই আসনে জাকের পার্টির প্রার্থী ফয়সাল বিন শফিক ঋণখেলাপি হওয়ায় এবং বিএনপির প্রার্থী মাহবুবর রহমান পৌরসভার মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ না করায় তাদের প্রার্থিতা হারান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আরেক প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশার মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

বগুড়া-৭ আসনে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির তিন জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বিএনপির প্রার্থী মোরশেদ মিল্টন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও সেটি গৃহীত না হওয়ায় তার মনোনয়পত্র বাতিল হয়েছে। বিএনপির আরেক প্রার্থী সরকার বাদল উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করায় তার মনোননয়পত্র বাতিল করা হয়। কার্যত এই আসনে বিএনপির আর কোনো প্রার্থী থাকল না।

এই আসনে দলীয় মনোনয়ন না থাকায় আওয়ামী লীগের মোস্তফা আলম নান্নু, এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর ভুয়া থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলু ও ফেরদৌস আরা খান, সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর নির্ধারিত সময়সীমা শেষ না হওয়ায় জাসদের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাকের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

বগুড়ার সাতটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৮৩ জন প্রার্থী। আপিল নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত এই সংসদীয় আসনগুলোতে এখন ৫৮ জন প্রার্থী বহাল থাকলেন।



রাইজিংবিডি/বগুড়া/২ ডিসেম্বর ২০১৮/এ কে আজাদ/বকুল