ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

থাইরয়েড সুস্থ রাখবে যেসব খাবার

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
থাইরয়েড সুস্থ রাখবে যেসব খাবার

থাইরয়েড হলো শরীরের নীরব চালিকাশক্তি। প্রজাপতির আকারের এই ছোট্ট হরমোন গ্রন্থি গলায় অবস্থিত এবং রক্তপ্রবাহে প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট পরিমাণ থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ করে শরীরের অনেক ফাংশন নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটা যদি বেঠিক কাজ করা শুরু করে সেটা তখন বোঝা যায়।

গ্রথি যখন যথেষ্ট পরিমাণ থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ করতে পারে না তখন স্বাভাবিকের তুলনায় কম সক্রিয় থাইরয়েড থাকে যা থেকে ওজন বাড়ার সাথে অলসতা, বিষণ্ণতা এবং বেশি মাত্রায় ঠাণ্ডা লাগার মতন সমস্যা হয়। শরীরে অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন হলে অতিসক্রিয় থাইরয়েডের সমস্যা হয় যা থেকে আচমকা ওজন কমা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ঘাম হওয়া, স্নায়বিক দুর্বলতা ও বিরক্ত-অস্বস্তি হয়।

থাইরয়েড সুস্থ থাকলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। কিছু খাবার থাইরয়েডের কার্যক্রম ঠিক রাখতে সহায়তা করে। একারণে থাইরয়েডের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে খাদ্যতালিকায়ও মনোযোগ দিতে হবে। এ প্রতিবেদনে থাইরয়েড-বান্ধব দশটি খাবার উল্লেখ করা হলো।

বেরি: আপনার শরীরের অন্যান্য গ্ল্যান্ড ও অর্গানের মতো থাইরয়েডও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পেতে চায়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ খাবার ফ্রি র‍্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করতে পারে। ফ্রি র‍্যাডিকেলস জনিত ড্যামেজ থেকে হাইপোথাইরয়েডিজম (যখন থাইরয়েড গ্ল্যান্ড পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন করে না), ক্লান্তি ও ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ব্রাজিল নাট: অন্যান্য বাদামের মতো ব্রাজিল নাটও স্বাস্থ্যকর, বিশেষ করে থাইরয়েডের জন্য। ব্রাজিল নাটে প্রচুর সেলেনিয়াম পাওয়া যায়- এই পুষ্টি থাইরয়েডের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সহায়তা করে। আপনার ডায়েটে পর্যাপ্ত সেলেনিয়াম থাকলে হাইপোথাইরয়েডিজম ও গলগণ্ড থেকে সুরক্ষা পেতে পারেন।

সামুদ্রিক শৈবাল: আপনি জেনে বিস্মিত হবেন যে সমুদ্রের শৈবালও খাওয়া যায়!আমাদের থাইরয়েডের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলোর একটি হচ্ছে আয়োডিন, যা প্রচুর পরিমাণে এ শৈবালে রয়েছে। সাধারণত অধিকাংশ মানুষই আয়োডিনযুক্ত লবণ থেকে পর্যাপ্ত আয়োডিন পেয়ে থাকেন, কিন্তু আপনার ডায়েটে লবণের ব্যবহার কম হলে এই পুষ্টির ঘাটতিতে ভুগতে পারেন। আপনি স্ন্যাক হিসেবে সামুদ্রিক শৈবালের সালাদ অথবা শুষ্ক সামুদ্রিক শৈবাল খেতে পারেন।

আপেল: আপেল আপনার শরীরকে বিষমুক্ত করতে পারে, যার ফলে থাইরয়েড কোনো বিঘ্নতা ছাড়াই কাজ করতে পারবে। শরীরে পারদের মতো ধাতব বেড়ে গেলে থাইরয়েডের পক্ষে প্রয়োজনানুসারে আয়োডিন ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে ফেলতে প্রচুর পরিমাণে আপেলের মতো সতেজ ফল খান।

মুরগির মাংস: মুরগির বুকের মাংস শুধু চর্বিহীন প্রোটিনেরই ভালো উৎস নয়। এ মাংসে প্রচুর জিংকও পাওয়া যায়। শরীরের জন্য পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে জিংকের প্রয়োজন রয়েছে। শরীরে জিংকের অভাব হলে চুল পড়ার মতো হাইপোথাইরয়েডিজমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডো থাইরয়েডের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর। এই ফলটি হচ্ছে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের সমৃদ্ধ উৎস। থাইরয়েডের কার্যক্রম ঠিকঠাক রেখে পুরো শরীরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে এসব পুষ্টির গুরুত্ব রয়েছে।

ডিম: থাইরয়েডের সুস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম শক্তিশালী খাবার হচ্ছে ডিম। ডিম হলো আয়োডিন ও সেলেনিয়ামের ভালো উৎস। থাইরয়েডের ফাংশন ঠিক রাখতে উভয় পুষ্টিরই দরকার রয়েছে। সর্বোচ্চ উপকার পেতে কুসুমসহ খান ডিম খান, শুধুমাত্র ডিমের সাদা অংশ নয়।

সামুদ্রিক মাছ: আমাদের থাইরয়েডের জন্য আয়োডিনের আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে সমুদ্রের মাছ। এদের মধ্যে স্যালমন মাছ আপনার থাইরয়েডের জন্য সবচেয়ে বেশি সহায়ক হতে পারে। প্রদাহ থাইরয়েডের ফাংশনে ব্যাঘাত ঘটায়, কিন্তু স্যালমন মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ প্রশমিত করে থাইরয়েডের ফাংশন সুষ্ঠু রাখে।

কুইনোয়া: কুইনোয়া এমনিতেই সুপারফুড খেতাব পায়নি। এই বীজ ছোট হলেও এতে থাইরয়েডের জন্য প্রচুর স্বাস্থ্যকর পুষ্টি রয়েছে। কুইনোয়ার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাইরয়েডের ধীরতা প্রতিরোধ করতে পারে। কুইনোয়া হচ্ছে একটি ভার্সেটাইল সুপারফুড- কোন রঙের কুইনোয়া খাচ্ছেন তার ওপর ভিত্তি করে পুষ্টিগুণের তারতম্য হবে।

দই: দই খেয়েও আপনার স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারেন। এই খাবারেও থাইরয়েডের জন্য দরকারি আয়োডিন পাওয়া যায়। দুগ্ধজাত খাবারে উচ্চ আয়োডিন কনটেন্ট থাকে। আয়োডিনের উৎস হিসেবে সামুদ্রিক শৈবাল আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, কিন্তু দইয়ের মতো সুস্বাদু খাবারে আপনার বিতৃষ্ণা নাও জন্মাতে পারে।

তথ্যসূত্র : টেস্ট অব হোম

পড়ুন :

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়