ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘দাবি আদায়ে যৌথ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে’

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ১৮ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দাবি আদায়ে যৌথ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা ও শ্রমিকদের চাকরির নিশ্চয়তা রক্ষা, শ্রমিক স্থায়ীকরণ, সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে শ্রমিকদের আবাসন ও মেডিক্যালসহ সকল সুবিধা বাস্তবায়নের জন্য ট্যানারি মালিক শ্রমিকদের যৌথভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর হাজারীবাগ ট্যানারি মোড়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন আয়োজিত বিপন্নপ্রায় চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা ও সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে এ কথা বলেন চামড়া শিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদের কো-চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাহাজ ডুবে গেছে। আমরা এখন বাঁচার জন্য ছোট নৌকাতে করে সাগরে ভাসছি। তাই আমাদের বাঁচার জন্য সকলে (ট্যানারি মালিক-শ্রমিক) মিলে এক সঙ্গে নৌকার বৈঠা বেয়ে একটি লক্ষ্য ঠিক করে তীরের দিকে যেতে হবে। সামনে আরো বড় ঝড় আসতে পারে। তাই আমরা আমাদের লক্ষ্য ভিন্ন রাখলে সামনে এগিয়ে যেতে পারব না।’

ট্যানারি মালিক ও শ্রমিকদের সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘সমস্যা আমাদের সকলের রয়েছে। তাই আমি ট্যানারি মালিকদের বলব, অন্যায় ও অযৌক্তিক কোনো আচরণ শ্রমিকদের সঙ্গে করবেন না। আপনারা (শ্রমিকরা) প্রত্যয়নপত্র চেয়েছেন এবং এটি আপনাদের চুক্তিতেও রয়েছে, অবশ্যই আপনাদের প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে এবং আপনাদের বাদ দিয়ে আমরা সাভারের শিল্প নগরীতে যাব না। আপনাদের চাকরি হারানোর কোনো ভয় নেই।’

এ সময় শিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ‘দেশে এখন চামড়া শিল্পের ইতিহাসে দুর্ভিক্ষ চলছে। আর এটি হয়েছে এ দেশের কিছু পরিবেশবাদীর কারণে। আর তাদের ব্যবহার করছে কোনো তৃতীয় শক্তি। এরা মিলে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

‘আমাদের এখান থেকে সরালে নাকি বুড়িগঙ্গা নদী ঠিক হয়ে যাবে। কই বুড়িগঙ্গা নদী কি ঠিক হয়ে গেছে? এখনো তো বুড়িগঙ্গা নদীতে নানা ধরনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। তা কেন বন্ধ করা হচ্ছে না? আসলে আমাদের এখান থেকে সরানোই ছিল মূল লক্ষ্য,’ বলেন তিনি।

শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সাভারের বিসিক নগরীতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে এখন পর্যন্ত যে সুযোগ-সুবিধা আমাদের ও শ্রমিকদের দেওয়ার কথা আমরা জানিয়েছিলাম, তা আমাদের দেওয়া হয়নি। ওখানে শ্রমিকের জন্য বাসস্থানের, মেডিক্যাল সুবিধা ও শ্রমিকদের ছেলে-মেয়েদের জন্য স্কুলের ব্যবস্থা করা হয়নি। তাহলে শ্রমিকরা থাকবে কোথায়? আর অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিবে কোথায়? তারা মনে হয় ভুলে গেছে যে, কোটি কোটি টাকার মেশিন কিনলেই হয় না, তা চালানোর জন্য প্রয়োজন হয় শ্রমিকদের হাতের ছোঁয়া।’

‘আমরা বিসিকের বিরুদ্ধে মামলা করব। কারণ তারা আদালতকে মিথ্যা বুঝিয়ে আমাদের এখান থেকে অপসারণ করেছে। আর শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি ছিল আমরা তাদের প্রত্যয়নপত্র দেব। যে সকল ট্যানারি মালিকরা এখন পর্যন্ত এ প্রতয়নপত্র তাদের শ্রমিকদের দেননি, তারা অতি শিগগিরই এটি দিয়ে দেবেন। আর যারা এটি করবেন না আমি মনে করি তারা ট্যানারি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে যুক্ত।’

সমাবেশে শ্রমিক নেতারা চামড়া শিল্পের বৃহত্তর স্বার্থে শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে তাদের বেতন দেওয়ার দাবি জানান।

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক, বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ এপ্রিল ২০১৭/নাসির/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়