ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেশের জন্য অনেক বড় অর্জন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৭, ৪ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশের জন্য অনেক বড় অর্জন

অটিস্টিক শিশুদের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১ এপ্রিল তাঁকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলে অটিজম বিষয়ক চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মনোনীত করেছে। তাঁর এই স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে দেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে।

এ প্রসঙ্গে দেওয়া ঘোষনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান ডা. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের আন্তরিক ও নজিরবিহীন প্রচেষ্টায় তার দেশ বাংলাদেশে অটিজম স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে গুরুত্ব লাভ করেছে এবং এটি টেকসই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মনযোগ আকর্ষণেও সহায়ক হয়েছে।

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য সায়মার অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সায়মার নজীরবিহীন উদ্যোগ ও ত্যাগের ফলে শিশুদের মধ্যে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজওর্ডার, মানসিক ও অন্যান্য নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারসহ বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি সিয়ারোভুক্ত বিভিন্ন দেশ তথা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষিত হয়।’

শিশুদের অটিজম এবং স্নায়ুবিক জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়ে ২০০৮ সাল থেকে কাজ শুরু করেন সায়মা ওয়াজেদ। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্ব জুড়ে প্রশংসা অর্জন করে তাঁর কাজ। তাঁর উদ্যোগেই ২০১১ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় অটিজম নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের পরে গড়ে ওঠে সাউথ এশিয়ান অটিজম নেটওয়ার্ক। বলা যায়, তাঁর উদ্যোগেই অটিজম সচেতনতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাঁকে ‘অ্যাক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ অ্যাওয়ার্ড’ পদকে ভূষিত করে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অটিজম স্পিকস-এর পরামর্শক হিসাবেও কাজ করেন। ২০১৩ সালের জুনে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত হন।

ডা. পুনম ক্ষেত্রপাল বলেন, সিয়ারোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অটিজম নিয়ে সবার আগে কাজ শুরু করে। এক্ষেত্রে সায়মা ওয়াজেদ  অগ্রপথিক। তার উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্যখাতে খাতভিত্তিক কর্মসূচিতে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার ও নিউরো ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত ডিজঅর্ডারকে অন্তর্ভুক্ত করে। নিউরো ডেভেলপমেন্ট ও অটিজম নামে একটি ইনস্টিটিউট স্থাপনের পাশাপাশি দশটি সরকারি মেডিকেল কলেজে শিশুদের এ ধরনের সমস্যা চিহ্নিত করতে বিশেষ ইউনিট চালু করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ এখন থেকে সংস্থার সদস্যদেশগুলোতে এএসডি (অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার) সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। বিভিন্ন দেশের সরকারের এএসডি সংক্রান্ত জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং এই খাতের গবেষণায় অবদান রাখবেন।

সায়মা ওয়াজেদ দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কন্যা হিসেবে নয়, স্বীয় যোগ্যতা ও কর্মগুণেই এই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। অভিনন্দন সায়মা ওয়াজেদকে। তাঁর এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন। এতে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ এপ্রিল ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়