নতুন হানতাভাইরাস কী?
করোনাভাইরাস সামলাতে যখন হিমশিম খাচ্ছে মানুষ তখন হঠাৎ করেই শোনা গেল আরেকটি ভাইরাসে আবির্ভাবের কথা! এ যেন গোদের ওপর বিষ ফোড়া। এই ভাইরাসের উৎসস্থল চীনের ইউনান প্রদেশ। ইতোমধ্যে হানতা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি মারাও গেছে। যে কারণে পরিস্থিতি হয়েছে সিঁদূরে মেঘের মতো!
এই ঘটনায় দীর্ঘ তিন মাস ধরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিতে যাওয়া চীনের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফুটে উঠেছে। ব্যাপকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে তারা। কারণ এই নাজুক পরিস্থির মধ্যে চীন নতুন করে আর কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে রাজি নয়।
যে ভাবে ওই ব্যক্তি মারা গেলেন
চীনা রাষ্ট্রীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি কাজ শেষে শ্যানডং প্রদেশ থেকে ইউনান প্রদেশে ফিরছিলেন। যাত্রাপথে বাসের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে তাকে পরীক্ষা করে তার শরীরে হানতাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ওই বাসে আরও ৩২ জন যাত্রী ছিল। বাসের সব যাত্রীকে পরীক্ষার আওতায় নেওয়া হয়েছে।
হানতাভাইরাসের উৎপত্তি
বিশ্বের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হানতাকে নতুন ধরনের ভাইরাস বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের জৈব প্রযুক্তি সংস্থার মতে, এই ভাইরাসের সর্ব প্রথম সংক্রমণ ঘটে কোরিয়া (১৯৫১-৫৩) যুদ্ধের সময়। দক্ষিণ কোরিয়ার হানতা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এর প্রাদুর্ভাব ঘটে বলেই এর নামককরণ করা হয় হানতাভাইরাস। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। ওই রাজ্যে ১০ জন আক্রান্ত হন। ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়াতেও এই ভাইরাসে ১৭ জন আক্রান্ত হয়।
হানতাভাইরাস করোনাভাইরাসের পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। ইঁদুর ও কাঠবিড়ালির মল ও প্রস্রাবের মাধ্যমে ছড়ায় এই ভাইরাস। আক্রান্ত ইঁদুর বা কাঠবিড়ালির মল, প্রস্রাব এমনকি তাদের গর্তের সংস্পর্শে মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। এই ভাইরাসে কুকুর বিড়ালও আক্রান্ত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ সংস্থার (সিডিসি) মতে যেসব এলাকায় ইঁদুরের উৎপাত বেশি সেসব এলাকায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উপসর্গ
ভাইরাস সংক্রমণের এক থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রচন্ড জ্বর হতে পারে। সঙ্গে বমি, পেটে, মাথায় ব্যথা, ডায়রিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হবে। তবে তার গলা ব্যথা ও সর্দি হবে না।
চিকিৎসা
হানতাভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। এই রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাবার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সিডিসি’র মতে, চিকিৎসককে দেখানোর সময় অবশ্যই আপনাকে বলতে হবে আপনি ইঁদুর কিংবা কাঠবিড়ালির সংস্পর্শে ছিলেন কিনা। তাহলে চিকিৎসা প্রদান করা সহজ হবে।
ঢাকা/মারুফ/তারা/নাসিম
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন