ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নলতা শরীফে ইফতারিতে মুসল্লির ঢল নামে প্রতিদিন

এম.শাহীন গোলদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ৪ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নলতা শরীফে ইফতারিতে মুসল্লির ঢল নামে প্রতিদিন

এম.শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা শরীফে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার রোজাদারের ইফতার প্রস্তুত হয়। ইফতারিতে এখানে ঢল নামে মুসল্লিদের।

ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে প্রতিদিনই অংশ নেন হাজার হাজার মুসল্লি।শুধুমাত্র সওয়াব হাসিলের জন্য দুর-দুরান্ত থেকেও ইফতারের উদ্দেশ্যে রোজাদাররা ছুটে আসেন নলতা রওজা শরীফে ।কর্তৃপক্ষ জানান, রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে অন্তত ৬ হাজার এবং এখানের বিভিন্ন মসজিদ, মিশন ও মহল্লায় ৪ হাজার ইফতারির প্লেট সরবরাহ করা হচ্ছে প্রতিদিন।

১৯৫০ সাল থেকে প্রতিবছর রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নলতা শরীফ রওজা চত্বরে বিশাল ছাউনি নির্মাণ করে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শাহ সুফি হজরত খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ (রহ.) নিজেই রমজান মাসব্যাপী এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পরও মিশন কর্তৃপক্ষ এ মাহফিলকে অব্যাহত রেখেছেন।

এবার নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের ব্যবস্থাপনায় ও নলতা শরীফের খাদেম আলহাজ্ব আনছার উদ্দিন আহমেদের বিশেষ তত্ত্বাবধানে এই ইফতার আয়োজনের করা হয়েছে । এবার বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য অস্থায়ীভাবে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইফতারি বিলি-বন্টন ও তদারকির জন্য রয়েছে ৪ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক।

ইফতারি সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে খেজুর, ছোলা,সিংগড়া, ফিরনি, চিড়া, কলা ও ডিম। এত মানুষের ইফতারির আয়োজনের পরও জেলার বিভিন্ন মসজিদে একবার করে ইফতারি পৌঁছে দেওয়া হয়।

ছোলা, ডিম ও ফিরনি তৈরির বাবুর্চি বাবু হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন ৮০০ কেজি দুধ দিয়ে ফিরনি রান্না করা হয়। সিদ্ধ করা হয় ১০ হাজার ডিম। প্রতি বছরই আমি এখানে রান্নার কাজ করে থাকি। এ মাসটি আমরা রোজাদারদের খেদমত করি।’

সিঙ্গারা তৈরির কারিগর মুক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি এখানে ৩৩ বছর ধরে সিঙ্গারা বানাই। ১৫ থেকে ২০ জন একত্রে কাজ করি। আসরের নামাজের আগেই সিঙ্গারা প্রস্তুত শেষ করে ফেলি ‘স্বেচ্ছাসেবকরা বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ৪টি গ্রুপে ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছি এখানে। সকলেই নিজ উদ্যোগে এখানে এসেছি। বিকাল ৪টার পর থেকে বণ্টন কাজ শুরু করি। চেষ্টা করি যেন আগত কোনো রোজাদারের কোনোরূপ অসুবিধা না হয়।’

৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইফতারিতে অংশ নিতে আসা সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মো.রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি এখানে ১০ হাজার মানুষ একসঙ্গে ইফতারি করে। অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষ এখানে আসেন। তাই আজ আমি অংশগ্রহণ করতে আসলাম।’

নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের নির্বাহী সদস্য শফিকুল আনোয়ার রনজু জানান, ক্রমেই এটার পরিধি বেড়েই চলেছে। নতুন মসজিদটা নির্মাণ হয়ে গেলে ওখানে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসার স্থান হবে। বর্তমানে অস্থায়ীভাবে টিন ও বাঁশ দিয়ে ছাউনি করা হয়েছে। এখানকার সকল কর্মকর্তার ইচ্ছা কেউ যেন খালি মুখে ফিরে না যায়। কেউ যেন কষ্ট না পায়। এটিই আমাদের মুর্শিদ হজরত খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ (রহ.) এর চাওয়া।




রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/ ৪ জুন ২০১৭/এম.শাহীন গোলদার/টিপু 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়