নিজেকে নির্দোষ দাবি ইকোনো কামালের

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি করেছেন প্রাক্তন এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে  আত্মপক্ষ শুনানিতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, আমি সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ। কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি। কাউকে টাকা আত্মসাৎ করতে সহায়তা করিনি। যে পাঁচটি চেকের কথা বলা হচ্ছে, সেই চেকগুলোর সিগনেটরি নির্দেশ অনুযায়ী এফডিআর করা হয়। সবগুলো এফডিআর তারেক রহমানের অফিসে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই টাকা তারেক রহমানের নিজস্ব না জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের, না অন্য কারো টাকা, তা চেক দেখে বোঝার উপায় ছিল না।

তদন্ত কর্মকর্তার দিকে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বা যোগাযোগের চেষ্টা করেননি। যে কারণে আমার বক্তব্য তিনি জানতে পারেননি। তদন্ত কর্মকর্তা সঠিকভাবে তদন্ত করলে এই এফডিআরের ভাঙানো টাকা কী কারণে, কার অ্যাকাউন্টে যায় তা সঠিকভাবে জানতে পারতেন।

তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, মামলার যে আত্মসাৎকৃত টাকার কথা বলা হচ্ছে, ওই টাকা থেকে অথবা ওই টাকার সুদ থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়নি। অথবা কাউকে ওই টাকা থেকে লাভবান হতে সহায়তা করিনি। তিনি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।

এদিকে ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদও এ মামলায় আত্মপক্ষ শুনানি করেন। আত্মপক্ষ শুনানিতে তিনিও নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। শরফুদ্দিন আহমেদ কোনো বক্তব্য না দিলেও দুই পাতা কম্পিউটারে কম্পোজকৃত লেখা আদালতে জমা দিয়েছেন।

মামলাটিতে সাফাই সাক্ষী দেবেন কিনা- আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে শরফুদ্দিন আহমেদ সাফাই সাক্ষী দিলেও সালিমুল হক কামাল সাফাই সাক্ষী দেবেন না বলে আদালতকে জানান।

এদিকে এ মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী ৩০ জানুয়ারি আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যথায় তার জামিন বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।

প্রসঙ্গত, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, প্রাক্তন এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

আসামি তারেক রহমান সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে আছেন। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৭/মামুন খান/মুশফিক