ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, জরিমানায়ও নিয়ন্ত্রণে আসছে না

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৯, ১ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, জরিমানায়ও নিয়ন্ত্রণে আসছে না

করোনা রোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটিকে পুঁজি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের দাম  বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও চলছে। এসব অভিযানে দায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। এরপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের দাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, করোনার কারণে অনেক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাই পণ্য আমদানিও বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, রোজা কেন্দ্র করেও অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি মাসে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠক করে। বৈঠকে ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের  দাম না বাড়ানোর অঙ্গীকার করলেও পরবর্তী সময়ে তারা কথা রাখেননি।  

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মামুন আহসান খান বলেন, ‘শবে বরাতের পর থেকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। ভেবেছি, রোজায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তখন দামও কমবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা পরারও  চিনি, ছোলা, তেলসহ নিত্য পণ্যের দাম কমেনি।’

যাত্রবাড়ীর পাইকারী মুদি ব্যবসায়ী মোহাম্মাদীয় স্টোরের প্রোপাইটার মো. বায়েজিদ  বলেন, ‘বাজারে কোনো সংকট নেই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পণ্য আছে। বড় ব্যবসায়ীরা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা বেশি দাম দিয়ে কিনে আনি। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’

মৌলভী বাজারের ব্যবসায়ী হাজী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘বাজারে সব ধরনের পণ্য আছে। পরিবহন সংকটের কারণে বেশি ভাড়া দিয়ে পণ্য এনে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।’

এদিকে, রোজা শুরুর এক সপ্তাহ আগ থেকে বাজারে খোলা বাজারে নিত্যপণ্য বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ  (টিসিবি)। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রমজানে রাজধানীর ৯০ স্থানে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এসব স্পট থেকে পণ্য কিনছেন গরিবরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বলে টিসিবির পণ্যের প্রতি অনেকেরই আগ্রহ কম। তাই টিসিবির পণ্য বাজারে প্রভাব ফেলতে পারেনি।’

টিসিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে। তাই ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা দিলেও তাতে তাদের কিছু এসে-যায় না। আদালতে অভিযান শেষে তারা আবারও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এ কারণেই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না।’  

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা বলেন, ‘গত মাস থেকে (মার্চ) প্রতিদিন বাজার তদারকি করায় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কী  কারণে দাম বেড়েছে—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম পেলে সঙ্গে-সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  

জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রোজায় কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা হয়েছে। বাজারে কোনো অনিয়ম দেখলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু দুই-একটি বাদে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল।’ সর্বশেষ আদার দাম বেড়েছিল, এখন তা কমছে বলেও তিনি জানান।  


ঢাকা/ আসাদ/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়