ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নীলফামারীতে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি

ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১৩ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নীলফামারীতে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি

নীলফামারী প্রতিনিধি : তিস্তা নদী এখন সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। উজানের ঢলে তিস্তা অববাহিকা রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। চারদিকে গর্জন আর গর্জন। কাঁপিয়ে তুলছে সব কিছু।

নীলফামারী ডিমলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি রোববার সকাল ৬ টা হতে বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর ছিল।

এরপর রাত ৯টায় ৩৫ সেন্টিমিটার ও রাত ১২টায় ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবহিত হচ্ছিল। গতকাল রাত ৯ টায় তিস্তায় রের্ড এলার্ট জারি করে পাউবো কর্তৃপক্ষ।

এতে তিস্তা ব্যারেজটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তিস্তা অববাহিকার গ্রাম ও চর এলাকায় মাইকিং ও ঢোল পিটিয়ে মানুজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিস্তা নদীর বন্যা ছাড়াও গত পাঁচদিনে একটানা ভারি বৃষ্টিপাতে ডোমার, নীলফামারী সদর, কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলায়ও বন্যা দেখা দিয়েছে।

তিস্তার বন্যায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও  কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২২টি চরের ও নদীবেষ্টিত এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী ডোমার উপজেলার বোড়গাড়ি, হরিণচড়া, পাঙ্গমটকপুর, সদর ইউনিয়ন, বামুনিয়া, নীলফামারী সদরসহ বন্যায় জেলার প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, ফরেস্ট চরের ৫০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।

এদিকে পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, ঝাড়সিংশ্বর এলাকাসহ জলঢাকার ডাউয়াবাড়ী, হলদিবাড়ী, গোপালঝাড় ও আলসিয়া পাড়ার বাড়িগুলো হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে।

টেপাখরিবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, তার ইউনিয়নের পূর্বখড়িবাড়ি এলাকার অধিকাংশ বাড়ির ভেতর দিয়ে স্রোত বয়ে যাচ্ছে। বন্যাকবলিত মানুষজন বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এই মুহূর্তে শুকনো খাবার ও সরকারি ত্রাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীতে আজ সকাল ৬ টায় বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এতে তিস্তা নদীতে রের্ড এলার্ড জারি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডালিয়া পাউবোর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. খালেদ রহিম জানান, তিস্তা নদীর বন্যা অনেকটা ভয়াবহ অবস্থায় সৃষ্টি করেছে। আমরা সবসময় খোঁজখবর রাখছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের তৎপর থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমানে খাদ্য ত্রাণ ভাণ্ডারে মজুদ রয়েছে। তালিকা করে বন্যাদুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।




রাইজিংবিডি/নীলফামারী/১৩ আগস্ট ২০১৭/ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়