ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পথশিশুদের পাশে ‘হেল্প অ্যান্ড কেয়ার’

জুনাইদ আল হাবিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পথশিশুদের পাশে ‘হেল্প অ্যান্ড কেয়ার’

জুনাইদ আল হাবিব : পথশিশুদের জন্য সাধারণ জ্ঞান ও ৩০ মিনিটের আনন্দ পাঠশালা, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে বন্ধু দিবস উদযাপন, উপকূল সুরক্ষায় সবুজ বৃক্ষরোপণ অভিযান, রক্তদান কর্মসূচি, শীতার্তদের মাঝে শীতের সামগ্রী বিতরণসহ নানান সামাজিক সেবামূলক কর্মকাণ্ড।

এমন সামাজিক কাজে যুক্ত সংগঠনটির তরুণরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। অনলাইন ও অফলাইনভিত্তিক এ সংগঠনটির সদস্যরা অসহায় মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় পাশে থেকে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। বলছিলাম বঙ্গোপসাগর, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বুকে জেগে ওঠা উপকূলের দ্বীপ জেলা ভোলার অন্যতম একটি সামাজিক সংগঠন ‘হেল্প অ্যান্ড কেয়ার’ এর কথা।

সমাজে শিক্ষার আলো ও নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সংগঠনটি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। দ্বীপ জেলায় বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে সংগঠনটি গণমানুষের আস্থা অর্জন করেছে। বেশির ভাগ সময় সংগঠনটি অবহেলিত ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে নানা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকে।



ভোলার একটি অনলাইন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক রাকিব উদ্দিন অমির হাত ধরে সংগঠনটির পথচলা শুরু। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন সিয়াম আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আছেন স্বেচ্ছাসেবী ও তরুণ সাংবাদিক এম শরীফ আহমেদ, প্রচার ও আইটি সম্পাদক দায়িত্বে আছেন ইমতিয়াজুর রহমান। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে চলছে সংগঠনটির সাংগঠনিক কার্যক্রম।

‘বহুদিন থেকেই ইচ্ছে ছিল আমাদের আশেপাশের অবহেলিত-অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করার। দুই বন্ধুর সহায়তায় ‘হেল্প’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি ২০০৮ সালে। তিন বন্ধু মিলে পথশিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করি। কিছুদিন কাজ করার পরে জাগো ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে প্রায় চার বছর তাদের মাধ্যমে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাজ করেছি। ২০১৬ সালের শেষে দিকে নিজ উদ্যোগে হেল্প অ্যান্ড কেয়ার সামাজিক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছি। আমার মা ও বড় ভাই সব সময় সকল প্রকার সামাজিক কাজে অনুপ্রেরণা যোগাতেন ও সাপোর্ট করতেন। এক কথায় পরিবার থেকে আমি উদ্বুদ্ধ হই।’ সংগঠনটির শুরু ও অনুপ্রেরণার গল্প প্রসঙ্গে বলছিলেন প্রতিষ্ঠাতা রাকিব উদ্দিন অমি।



সামাজিক কাজ করতে গিয়ে মানুষের কেমন সহযোগিতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হয়েছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হয়েছিল, তখন মানুষ হাসতো, বলতো- এসব করে কি হবে? পড়াশোনায় পুরো সময় ব্যয় কর, কাজে লাগবে। এখন ভালো কাজ করায় সবাই পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে, আর্থিক অনুদান পেলে আরো ভালো কিছু করা যেত।’

‘সামাজিক কাজে যুবসমাজকে যুক্ত করা ছিল আমার কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ঘুরতে হয়েছে, স্কুলের মাঠে অনুমতি পাইনি বলে রাস্তার পাশে বসে কাজ করতে হয়েছে। এছাড়াও ছিন্নমূল শিশুকে স্কুলমুখী করাটাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।’



কাজ করতে গিয়ে নিজ অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলছিলেন, ‘প্রথমে খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা ছিল। এখন খুব ভালো লাগে পথশিশু এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে। ভালো কাজে আসলে ভালো মানুষগুলোকেই পেয়েছি। এজন্য অনেক ভালোও লাগে এসব কাজ করতে। আর এসব কাজকে আনন্দ করে নিলে কাজ করতে সহজ হয়।’

সংগঠনের ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাইলে রাকিব উদ্দিন অমি বলেন, ‘পথশিশুদের জন্য একটি ডিজিটাল স্কুল তৈরি করা। যেখানে আমরা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে পারবো এবং যুবসমাজকে সংগঠিত করা যেন সকল প্রকার সামাজিক কাজে এগিয়ে আসতে পারে। মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে পারে। আরো কিছু পরিকল্পনা আছে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও মাদকমুক্ত একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমি ও আমার সংগঠন হেল্প অ্যান্ড কেয়ার নিরলসভাবে কাজ করছি।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়