ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পরিচ্ছন্নতায় সচেতনতা বেড়েছে, নির্ধারিত স্থানে অনাগ্রহ

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ১২ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরিচ্ছন্নতায় সচেতনতা বেড়েছে, নির্ধারিত স্থানে অনাগ্রহ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু জবাই এবং পরবর্তী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে রাজধানীবাসীকে সচেতন দেখা গেছে। তবে এবারও নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে পুরোপুরি সাড়া মেলেনি।

রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, মহল্লার রাস্তায়, অলিগলি, নিজের বাসার সামনের সড়ক বা ফাঁকা স্থানে পশু কোরবানি হচ্ছে। দূষণ প্রতিরোধ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানির আহ্বান জানিয়েছিল ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশন। (মসিক)। উভয় সিটি করপোরেশনে পশু কোরবানির জন্য ৭৯৩টি স্থান নির্ধারণ করা হয়।  এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫২০টি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৭৩টি। জনসচেতনতা বাড়াতে ঈদের আগে কয়েকদিন মাইকিং ও প্রচারপত্র বিলি করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানির ক্ষেত্রে আহ্বানে সাড়া মেলেনি।

তবে, কোরবানির পর ওই স্থান পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে কোরবানি দাতাদের মধ্যে সচেতনতা দেখা গেছে। কোরবানির কাজ শেষে নিজেরাই ধুয়ে দিচ্ছেন রক্ত, উচ্ছিষ্টসহ বিভিন্ন আবর্জনা।

কয়েকজন কোরবানি দাতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজেদের তৈরি ময়লা নিজেদের তৈরি করার মানসিকতা বেড়েছে নগরবাসীর। এর সাথে সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপের কারণে সবাই নিজেদের আশপাশ পরিষ্কার রাখার দিকে মনোযোগী।

পশ্চিম আগারগাঁও বাসিন্দা আতিয়ার হোসেন গত ৩০ বছর ধরে রাজধানীতে কোরবানি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার কোরবানির উচ্ছিষ্ট আমার লোকেদের দিয়ে আমি পরিষ্কার করে রাখি। যে অংশগুলো ড্রেনে ফেলা যায় না, সেগুলো জমিয়ে রাখি। সেগুলো নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তারা যদি তাড়াতাড়ি এসব নিয়ে যায়, ওষুধ ছিটিয়ে দেয়, তাহলে ময়লাও জমবে না, কোনো রকম গন্ধও ছড়াবে না।’

এদিকে, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পশু কোরবানির জন্য নির্ধারিত স্থানে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ইমাম ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মাংস প্রস্তুতকারীর পাশাপাশি বর্জ্য অপসারণের জন্য পর্যাপ্ত ভ্যানের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত স্যাভলন ও ফিনাইল মিশ্রিত পানি ছিটানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। নির্ধারিত এসব স্থানে অনেকেই পশু কোরবানি দিয়েছেন।

রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত হয় সোমবার সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। নামাজ শেষে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন পশু কোরবানিতে। গরু-ছাগল জবাই, মাংস বিলি আর রান্না-খাওয়ায় উৎসবের আমেজে ঈদুল আজহা পালন করছেন মুসলমান সম্প্রদায়।

সিটি করপোরেশনের হিসাবে কোরবানির ঈদে ঢাকায় পাঁচ লাখের মতো পশু কোরবানি হয়। এসব পশুর বর্জ্য সরিয়ে নিতে মাঠে রয়েছেন দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় ১৮ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী।

উত্তর সিটির পক্ষ থেকে এবার পশু কোরবানির জন্য ১০০ জন ইমাম এবং ২০০ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। মহাখালী পশু জবাইখানায় যারা কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন, তাদের পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত বাবদ ২৫ শতাংশ খরচ সিটি করপোরেশন বহন করবে বলে জানিয়েছেন উত্তরের মেয়র।

ঈদের প্রথম দিনের কোরবানির বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। রোববার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের কোরবানির বর্জ্যও দ্রুত অপসারণ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।  

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ আগস্ট ২০১৯/হাসান/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়