ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘পরিবারের জন্য মন কাঁদে’

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৪ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘পরিবারের জন্য মন কাঁদে’

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের অচলাবস্থায় শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কার্যত ঘরে বন্দি জীবন কাটছে তাদের। কিন্তু যাত্রীবাহী বাসে এক অন‌্যরকম বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব মো. বাদল। বাসের ভেতরেই এখন তার দিন-রাত।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম মো. সোহরাব হোসেন। মাদারীপুরের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ডাসার থানার ছোট্ট গ্রাম খিলগাওয়ে রয়েছে তার পরিবার।

পরিবারে দুই ছেলে,এক মেয়ে ও স্ত্রী। তাদের লালন-পালন ও জীবিকার তাগিদে বাদল বেছে নেন গণপরিবহনে শ্রমিকের কাজ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটেছেন বিভিন্ন পরিবহনে। সর্বশেষ আত্মীয় পরিচয়ের সুবাদে চাকরি হয় কিশোরগঞ্জ-ঢাকা চলাচলকারী পরিবহন কোম্পানিতে। একটি বাসে তাকে দেওয়া হয় সুপারভাইজারের দায়িত্ব। দিনের পর দিন থেকেছেন পরিবার ছেড়ে, তখনও এতটা কষ্ট হয়নি এখন যেমন হচ্ছে। পরিবার ছেড়ে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে পড়ে  আছেন তিনি। মন কাঁদে পরিবারের কথা ভেবে। তখন চুপচাপ বসে থাকেন।

সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় গণপরিবহন চলাচল। এতে বিপাকে পড়ে যান বাদল। পারিশ্রমিকের জমানো ছয় হাজার টাকা বিকাশের মাধ‌্যমে পাঠিয়ে দেন পরিবারের কাছে। তখন ভাবেননি এমন লম্বা ছুটিতে পড়ে যাবেন। ফোনে কথা হয় পরিবারের সদস‌্যদের সঙ্গে। খরচের কথা ভেবে সেটাও কমিয়ে দিয়েছেন। প্রতিদিন বাসের দেখশোনা করছেন তিনি।

ওই বাসের চালক মো. মিন্টু মিয়া বলেন, বাদল কষ্ট হলেও কাউকে বলেন না। প্রতিদিন বাস কর্তৃপক্ষ খাবারের জন‌্য দেড়শত টাকা তাকে দেন। কিন্তু হোটেল বন্ধ থাকায় খাওয়ার কষ্ট হচ্ছে। আর দুই বেলা খাওয়ার জন্য এই টাকা খুবই কম।

বাদল বলেন, ‘‘যখন শুনলাম মাদারীপুরে শিবচরে করোনাভাইরাস সংক্রমণে অবস্থা খারাপ, তখন থেকে পরিবারের কথা ভেবে মন কাঁদে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কিছু করতে পারছি না।’’

তিনি বলেন, ‘‘কিছু কিছু করে টাকা জমিয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। এখন তো সেটারও উপায় নেই।’’ 

 

ঢাকা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়