ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পর্যটন বন্ধ, বান্দরবানে দৈনিক ক্ষতি ৪ কোটি টাকা

বাসু দাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২১ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পর্যটন বন্ধ, বান্দরবানে দৈনিক ক্ষতি ৪ কোটি টাকা

করোনা আতঙ্কে বান্দরবান জেলার সব হোটেল মোটেল ও পর্যটন স্পট বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এতে পর্যটক আগমন বন্ধ থাকায় একদিকে লোকসানের মুখে পড়ে দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে অন্তত ৪ কোটি টাকা, অন্যদিকে বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছু পর্যটন নির্ভর। পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় জেলা শহরের শত শত পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা নেই। ফলে দোকান ভাড়া ও কর্মচারীর বেতন দিতে পারবেন কিনা অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কোন কোন প্রতিষ্ঠান এরই  মধ্যে কর্মচারী ছাটাইও করেছে। একই চিত্র জেলা শহরের শতাধিক হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, কুটির শিল্পের দোকান ও পরিবহন সেক্টরে।

বান্দরবান জিপ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি মো. হারুন বলেন, ‘পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার ফলে পর্যটকবাহী ৪ থেকে ৫শ গাড়ি এখন বসে আছে। ফলে কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে আমরা, তা নিরুপণ করা যাবেনা।’

অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ১৯ মার্চ থেকে জেলার সব হোটেল মোটেল ও পর্যটন স্পট বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। জেলার হোটেল-মোটেলগুলোর গ্রাহকদের ৯০ ভাগই পর্যটক। এখন পর্যটক না থাকায় এসব হোটেল-মোটেলও চরম লোকসানের মুখে।

বান্দরবানের হোটেল হিলভিউ এর জেনারেল ম্যানেজার সুলতান নাফিজ মাহমুদ বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নির্দেশনার কারণে পর্যটকদের হোটেল ত্যাগ করার নির্দেশনা দিয়েছি, ফলে হোটেলে এখন শূন্যতা বিরাজ করছে।’

বান্দরবানে মেঘলা, নীলাচল, নীলগীরি, শৈল প্রপাত, প্রান্তিক লেক,চিম্বুক, স্বর্ণমন্দির, শুভ্রনীলা, নীলদিগন্ত, মিরিঞ্জা, বগালেক, কেওক্রাডং, রিজুক, নাফাখুম, তিনাপ সাইতার, বড় মদক, ছোট মদকসহ অর্ধ শতাধিক পর্যটন স্পট রয়েছে। এগুলোও এখন বন্ধ। ফলে এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্যে ও পর্যটকবাহী যানবাহনে।

পর্যটকবাহী যানবাহন চালক নাজির উদ্দিন বলেন, ‘করোনার জন্য পর্যটক আসা বন্ধ করে দেয়ায় বান্দরবান এখন পর্যটক শূন্য। আমরা সবাই বেকার, বুঝতে পারছি না কখন এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।’

এদিকে বান্দরবানের থানচি উপজেলার নাফাখুম, রেমাক্রি, বড় মদক, ছোট মদকসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে যেতে ২শ  ইঞ্জিনচালিত বোট ব্যবহার হলেও কার্যত পর্যটক বন্ধ থাকায় বেকার সময় কাটছে এসব বোট চালকদের।

থানচির পর্যটনস্পটে ও রুমা উপজেলার রিঝুক ঝর্ণা, বগালেক, কেওক্রাডংয়ে পর্যটকদের জন্য ১৫০জন নিবন্ধিত গাইড থাকলেও বেকার সময় কাটছে তাদের।

নিজেদের বেকারত্বের কথা বলতে গিয়ে থানচি উপজেলার ট্যুরিস্ট গাইড জওয়াই প্রু মার্মা বলেন,  ‘বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে, বেঁচে থাকলে টাকা আয় করা যাবে, আমরা পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।’

বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবকিছু বন্ধ থাকার কারণে বান্দরবানে দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে অন্তত ৪ কোটি টাকা। হোটেলে কর্মরত এক থেকে দেড় হাজার কর্মচারী এখন বেকারত্বের মধ্যে অবস্থান করছে।’

 

বান্দরবান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়