ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৮, ৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব

সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশ। অপরূপ সৌন্দর্য আর নানা শস্য-সম্পদে ভরা আমাদের এ দেশের খ্যাতি ছিল সোনালি আঁশের দেশ হিসেবেও। এক সময়ে বাংলাদেশের পাট ছিল বিশ্বখ্যাত, যা বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা উপার্জন হতো। কিন্তু নানা কারণে পাট তার মর্যাদা হারায়। পাটের অনেক রকমের বিকল্প আবিষ্কৃত হয়েছে। এক পর্যায়ে সঠিক দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যেও পাট চাষে অনীহা সৃষ্টি হয়।

তবে পাটের সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পাটপণ্যের বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে প্রথমবারের মতো ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালন করা হয়েছে সারাদেশে। এ উপলক্ষে আট দিনের কর্মসূচিও নেয়া হয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে বহুমুখী পাট-পণ্য মেলার আয়োজন।

রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বৃহস্পতিবার এ মেলার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাটের সোনালী দিন ফিরেছে। তিনি পাটের তৈরি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি আরো বলেন, ‘পাট পরিবেশবান্ধব, এর থেকে আর উন্নত কিছু হতে পারে না। পাট উৎপাদন ও সংরক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাট থেকে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করে তা আমরা রপ্তানি করবো। প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগেও পাটের সেই অমিত সম্ভাবনা রয়ে গেছে।’

দেশে পাট শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আধুনিকায়নের ধারা বেগবান করা, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন আমাদের। সে লক্ষ্যেই জাতীয় পাট দিবস পালন করা হচ্ছে। পাট শিল্পের অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে বর্তমান সরকার দেশের অভ্যন্তরে ছয় পণ্য- ধান, গম, চাল, ভুট্টা, চিনি এবং সার প্যাকেটজাত কিংবা মোড়ক তৈরিতে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়া আরও ১২টি পণ্যের মোড়ক তৈরিতে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় বাজারে পাটের চাহিদা অনেক বেড়েছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব বাজারে বহুমুখী পাটপণ্যের রফতানি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত গত দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে এ খাতকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছে। শুধু বহুমুখী পাটপণ্য খাত থেকে ভারত আয় করছে দশ হাজার কোটি রুপি।

পাটের আঁশ দিয়ে ব্যাগ, ফ্যাশন্যাবল পোশাক, হোম ডেকোর থেকে কর্পোরেট গিফটসহ নানা কিছু তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বিশ্বজুড়ে বাড়ছে এসব পণ্যের চাহিদা। আবার অনেক দেশে পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ায় পাটপণ্যের ব্যবহার ও চাহিদা বাড়ছে।

বাংলাদেশেরও উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে এ খাতে একটি শক্তিশালী অবস্থান করে গড়ে তোলার। পণ্য ও ডিজাইনের উন্নয়ন ঘটিয়ে বাংলাদেশ এসব বাজারে শক্ত জায়গা করে নিতে পারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎপাদন অব্যাহত রাখলে পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব। বহুমুখী পাটপণ্য কেবল উৎপাদন করলেই হবে না, এর ডিজাইন, বৈচিত্র্য এবং বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে তা করতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৭/আলী নওশের/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়