ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পাহাড়ে ফল বাগানে দেশি মুরগির খামার

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২২ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাহাড়ে ফল বাগানে দেশি মুরগির খামার

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের কাছে  নূরুল ইসলামের বাগান। এ বাগানের পাহাড়ি টিলায় লেবু, পেঁপে, কলা, শাক, বারোমাসি সবজি, নাগা মরিচ চাষ করেন তিনি।

এছাড়া, রয়েছে আম, কাঁঠাল, লিচু ও পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। বাগানের ঘাস খাইয়ে পালন করেন দেশি গরু।

সকাল হলে গ্রামের বাড়ি উপজেলার সুন্দ্রাটিকি থেকে বাগানে এসে পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সারাদিন বাগান পরিচর্যার পর আবার সন্ধ্যায় তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। তাকে সার্বক্ষণিক বাগানে দেখভাল করেন বাগানের কেয়ার টেকার আব্দুল মালেক।

নূরুল ইসলাম পাহাড়ে ফল বাগানের পাশাপাশি নতুন করে মুরগি পালন করছেন। এর জন্য আলাদা করে ঘর নির্মাণ করেছেন তিনি। আর তাতে পালন করছেন দেশি মুরগি। নতুন এই খামারে প্রায় ৫০টি মোরগ-মুরগি রয়েছে। এগুলোকে তিনি ধান, চাল ও পানি খেতে দেন। পশু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়ম করে খাওয়ানো হয় ওধুষ। ফলে এখানকার মুরগির রোগ বালাই তেমন একটা নেই। একেবারে প্রাকৃতিক পরিবেশে মুরগিগুলো বেড়ে উঠছে সেখানে।

এখানকার পরিণত মুরগিগুলো যে ডিম দেয় তা থেকেই উৎপাদন করা হয় বাচ্চা।  সেগুলোকে আবার বড় করা হয়। এরপর সেগুলো থেকে নিজের চাহিদা মেটানোর পর বাজারে বিক্রি করেন তিনি। নতুবা নতুন ডিম পাড়ার জন্য রেখে দেন।

এভাবে নতুন তৈরি করা এই ছোট খামার থেকে নূরুল ইসলাম মাংস ও ডিমের যোগান পাচ্ছেন। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মুরগি ও ডিম তিনি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে আর্থিক দিক দিয়েও বেশ লাভবান হচ্ছেন তিনি। এভাবে খামারটিকে এগিয়ে নিতে চান নূরুল ইসলাম।

তবে, পাহাড়ে মুরগি পালনের জন্য বাড়তি সর্তকতার প্রয়োজন বলে মনে করেন নূরুল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি জানান, পাহড়ে শিয়ালের বেশ উপদ্রপ। সুযোগ পেলেই শিয়াল মুরগির খামারে হামলা চালায়। বিশেষ করে রাতে একটু অসাবধান হলেই শিয়াল মুরগি নিয়ে যায়। তাই, সবসময় ভালো করে খামার ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখতে হয়। একটু অসাবধান হলেই মুরগি খোয়া যায়।

পরিদর্শনকালে বাগান মালিক নূরুল ইসলাম জানান, ফল চাষের পাশাপাশি গরু ও মোরগ পালনের পেছনে একটা কারণ রয়েছে। গরুর গোবর ও মোরগের বিষ্ঠা  দিয়ে ভাল জৈব সার তৈরি করা যায়। জৈব সার গাছের জন্য বেশ উপকারী ও পরিবেশবান্ধব। এ সার গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করা হলে অধিক পরিমাণে ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। আর গরু ও মুরগির খামার থেকে তো বাড়তি লাভ থাকেই। তাই, পাহাড়ে গরু ও মোরগ পালন করছেন তিনি।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. জালাল উদ্দিন জানান, পাহাড়ে ফল বাগানের পাশাপাশি গরু ও মুরগির খামার খুবই লাভজনক। যারা এমনটা শুরু করেছেন বা করবেন ভাবছেন তাদের পাশে আছে সবসময় হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করা হবে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস জানান, বাজারে দেশি মুরগির চাহিদা প্রচুর। কিন্তু সেই তুলনায় খামার কম। নূরুল ইসলামের মতো পাহাড়ি এলাকার ফল বাগানগুলোতে খুব সহজে দেশি মুরগির খামার গড়ে তোলা যায়। আমদের এই অঞ্চলে যারা বেকার আছেন তারা এই কাজটি সহজেই করতে পারে। এতে করে নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।



হবিগঞ্জ/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়