ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পায়রা নদীতে কুমির আতঙ্ক, মাছ শিকার বন্ধ

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ১ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পায়রা নদীতে কুমির আতঙ্ক, মাছ শিকার বন্ধ

বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার পায়রা নদীতে কুমির আতঙ্কে জেলেরা মাছ ধরছেন না। শনিবার দুটি নৌকায় একাধিক কুমিরের আক্রমণের পর থেকে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জেলেদের দাবি, তারা অন্তত চারটি কুমিরকে একসঙ্গে ভাসতে দেখেছেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আমতলী ও তালতলী উপজেলার জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে নামছেন না।

প্রত্যক্ষদর্শী তিন-চারজন জেলে জানান, বরগুনার আমতলী ও তালতলী দুই উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত পায়রা নদী বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। শনিবার সকালে গাবতলী গ্রামের জেলে আলমগীর শিকদার জাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যান। এই সময় একটি কুমির তার নৌকায় হামলা করে। পরে আলমগীর ও তার সহযোগী জেলেরা জাল ফেলে রেখে দ্রুত নৌকা নিয়ে কিনারে আসেন। কিনারে এসে এই ঘটনা এলাকার অন্য জেলেদের কাছে জানালে প্রথমে কেউ বিশ্বাস করতে চাননি।

পরে ওই দিন দুপুরে গাবতলী আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা নাসিমা বেগম তার বোনের ছেলেকে নিয়ে নদীতে পানি আনতে গিয়ে দেখেন চারটি কুমির চরের সামান্য পানিতে ভাসছে। তারা আতঙ্কে দৌঁড়ে বাড়ি চলে আসেন।

একইভাবে রোববার গাবতলীর পাশের গ্রাম মৌপাড়ার জেলেরা নদীতে জাল ফেলতে যান। এই সময় ওই জেলেদের একটি নৌকায় কয়েকটি কুমির হানা দেয়। এতে অল্পের জন্য নৌকার জেলেরা রক্ষা পান।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তালতলী উপজেলার চন্দনতলা গ্রামের জেলে হেলাল বয়াতি জাল নিয়ে নদীতে রওনা দেন। তিনি বগি এলাকার পায়রা নদীর কিনারে গেলে সেখানে অন্তত দুটি কুমিরকে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান। পরে আতঙ্কে তিনি জাল-নৌকা ফেলে কিনারে উঠে স্থানীয়দের খবর দেন। খবর পেয়ে সেখানে শতাধিক লোক নদীর পাড়ে ছুটে এসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন।

কয়েক দিন ধরে একের পর এক জেলে নৌকায় কুমিরের হানা দেওয়ার খবরে জেলে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে কুমিরের ভয়ে পায়রা নদীতে জেলেরা মাছ শিকার বন্ধ রেখেছেন। তালতলী উপজেলার ছোটবগি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান বিশ্বাস বলেন, কয়েক দিন ধরে কুমির দেখা যাচ্ছে। তার কাছে এই চার দিনে এলাকার বহু মানুষ বিষয়টি জানিয়েছেন।

গোটা এলাকার জেলেদের মধ্যে কুমির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে পায়রা নদীর জয়ালভাঙ্গা, চন্দনতলা, বগীর বাজার, মৌপাড়া, গাবতলী ও চরপাড়ার ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত নদীতে জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামীম রেজা বলেন, নদীতে কুমির এসেছে এমন কথা তিনি শুনেছেন। অনেক জেলে ফোন করে তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বঙ্গোপসাগর থেকে দলছুট হয়ে এসব কুমির শাখা নদীতে প্রবেশ করেছে। নদীতে আসা এসব কুমির যাতে জেলেরা সংঘবদ্ধ হয়ে মেরে না ফেলে, সেই জন্য জেলে ও সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।



রাইজিংবিডি/বরগুনা/১ জুন ২০১৭/রুম্মন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়