ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্যাকেটজাত খাবার কেন খাবেন না

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ১৫ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্যাকেটজাত খাবার কেন খাবেন না

প্রতীকী ছবি

আহমেদ শরীফ : আমরা অনেকেই বড় সব সুপার মার্কেট থেকে প্যাকেটজাত খাবার কিনে খাই। তবে এসব প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তা কি জানি আমরা? শুধু কি তাই, বোতলজাত বা প্যাকেটজাত দুধ, জুস সবই যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তাও জানা উচিত আমাদের।

রিসাইকেল করা প্যাকেট ও বোতল থেকে টক্সিক উপাদান শরীরে প্রবেশ করে নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত মাছ, মাংসও ক্ষতিকর হতে পারে। প্যাকেটজাত খাবারের মান বিভিন্ন পরিবেশে কেমিক্যাল, এনজাইম, মাইক্রোবায়োলজিক্যাল কারণে পাল্টে যেতে পারে।

প্যাকেটজাত খাবার ফ্রিজে রেখে দিলে বা বাসায় এনে রাখলে তার মান, স্বাদ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। খাবারের প্যাকেট তৈরিতে যে সিনথেটিক কেমিক্যাল তাকে, তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের উপাদান শরীরে স্থায়ী প্রভাব ফেলে।

প্যাকেটে থাকা কেমিক্যাল খাবারকে দূষিত করে দিতে পারে, এতে তৈরি হতে পারে নানা রোগ। প্যাকেটজাত খাবার কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে বা শরীরকে পানিশূণ্য করে দিতে পারে। এছাড়া প্যাকেটজাত খাবার খেলে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেগুলো হলো-

* ক্যানসারের জন্ম দেয় : প্যাকেটজাত খাবারে সিনথেটিক বা প্লাস্টিকের উপাদান মিশে যায়। বাজারে যেসব বোতলজাত পানীয় আছে, সেগুলোতে ফরমালডিহাইড নামের ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকে, যা প্রোস্টেট ক্যানসার ও ব্রেস্ট ক্যানসার সহ বিভিন্ন ক্যানসারের জন্ম দিতে পারে।

* মনোযোগে ঘাটতি : অনেক বড় কোম্পানি তাদের খাবার ও পানীয়ের মান অক্ষুন্ন রাখতে গ্লাসে তৈরি পাত্রে পণ্য বাজারজাত করে। ভোক্তারা ক্ষতিকর প্লাস্টিকের চেয়ে সেসব বোতলজাত বা গ্লাসের তৈরি পাত্রে থাকা খাবার বেছে নেন। তবে আপনি কি জানেন এমন অনেক গ্লাসই আছে, যেগুলোতে সীসা থাকে? এই সীসায় থাকা নিউরোটক্সিন শরীরের জন্য খুব ক্ষতির কারণ। দুর্বল মনোযোগ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া এটি প্রসূতি নারী ও অল্প বয়সি শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

* মাথাব্যথা ও মানসিক সমস্যা : প্যাকেটজাত খাবারে থাকা কেমিক্যাল আপনার দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা সহ বেশ কিছু মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

* হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট : আমরা যেসব প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করি, সেগুলোতে থাকা কেমিক্যাল শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।

* হৃদরোগের ঝুঁকি : প্লাস্টিকের বিভিন্ন বোতলে থাকা বিসফেনল এ নামের কেমিক্যাল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

* হজমের সমস্যা তৈরি করে :  প্লাস্টিক, রাবার বা এ জাতীয় উপাদানের প্যাকেটে থাকা খাবার হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।

* ডায়াবেটিস জন্ম দেয় : খাবারের জন্য ঘরে আমরা যেসব প্লাস্টিকের পাত্র বা বোতল ব্যবহার করি, সেগুলোতে ক্ষতিকর উপাদান ফ্যাটালেট থাকে। এটি খাবারের মাধ্যমে শরীরে গিয়ে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এমনকি টাইপ টু ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের জন্ম দেয়।

* অ্যাজমার ঝুঁকি বাড়ায় : প্যাকেটজাত খাবারের প্যাকেট থেকে বিসফেনল এ বা বিপিএ নামের কেমিক্যাল শরীরে প্রবেশ করে অ্যাজমার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এই উপাদানটি মূলত প্লাস্টিকের তৈরি ইলেকট্রিক কেটলি বা কনটেইনারে বেশি থাকে। বিপিএ ৫ থেকে ১২ বছরের শিশুদের মাঝে অ্যাজমার জন্ম দেয় বেশি।

* প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয় : মূলত প্লাস্টিকের পাত্র বা বোতলজাত খাবারে থাকা ক্ষতিকর বিপিএ মানুষের দেহের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। এই টক্সিন শরীরে বেশি প্রবেশ করলে প্রজনন ক্ষমতা কমে যেতে পারে।

* রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় : যারা বেশি ফাস্ট ফুড খান, তাদের অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ প্যাকেটজাত হওয়ার কারণে সেগুলোতে কেমিক্যাল মিশে যায়। আর ওই খাবার শরীরে প্রবেশ করে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় দ্রুত। তাই এখন থেকে প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার আগে একাধিকবার ভাববেন নিশ্চয়ই।

তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মে ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়