ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রকাশক দীপন হত্যা : চার বছরেও বিচার শেষ হয়নি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ৩১ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রকাশক দীপন হত্যা : চার বছরেও বিচার শেষ হয়নি

জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী প্রকাশক ও ব্লগার ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার চার বছর পার হলেও এখনো মামলাটির বিচার শেষ হয়নি।

মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ হবে এমন আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষ।

২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওইদিনই তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে বিচারাধীন। গত ১৩ অক্টোবর মামলাটির চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। আগামী ১৮ নভেম্বর মামলাটির প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে।

মামলা সম্পর্কে নিহত দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘দেখতে দেখতে চার বছর হয়ে গেল ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। সরকারেরই তো মামলাটি বিচার করার কথা। সবাই বলে আসছে বাংলাদেশ বিচারহীনতার দেশ। যদি মামলাটির বিচার আরম্ভ হতেই চার বছর চলে যায়, তাহলে তো অনিশ্চয়তা থেকেই যায়। ওই বিচারের ওপর তো লোকের আস্থা থাকে না। দীপনের বিচার নিয়ে এর বেশি কিছু আমার বলার নেই। আমি চাই মামলাটির যেন বিচার হয়।’

মামলা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম সারওয়ার জাকির বলেন, ‘তিন বছর তদন্ত শেষে  মামলাটির চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে মামলাটি সন্ত্রাস বিরোধ  ট্রাইব্যুনালে আসে। চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর যতটুকু সময় গেছে তা পদ্ধতিগত কারণে। ই্তোমধ্যে মামলাটির চার্জ গঠন হয়ে গেছে। এখন আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে রায়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার।’

ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যার পর একই দিন লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কার্যালয়ে ঢুকে এর স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক রণদীপম বসু ও প্রকৌশলী আবদুর রহমানকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে। দীপনকে হত্যার পর ওই দিনই তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ১৫ নভেম্বর ঢাকা সিএমএম আদালতে ডিবির সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফজলুর রহমান ৮ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাস্তকৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে স্বাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের ও আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া চার্জশিটে ১১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। এরা হলেন, আরাফাত রহমান, সেলিম ওরফে হাদী, আলম, আকাশ, তৈয়ব, জনি, আসাদ, হাসান, তালহা, শরিফুল ও তারেক।

চার্জশিটে বলা হয়, দীপনকে হত্যার নির্দেশদাতা, মূল পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ছিলেন পলাতক সৈয়দ জিয়াউল হক। আসামি খাইরুল, আবদুস সবুর ও মইনুলকে তিনি হত্যাকান্ডের আগে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।

চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর চলতি বছর ৮ জানুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। গত ১৯ মার্চ মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে পলাতক থাকায় মেজর জিয়া ও আকরামের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। পরে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদন ও তাদের সম্পত্তি ক্রোক এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পাঁচটি ধার্য তারিখে গত ১৯ মার্চ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় ব্যয় হয়।

 

ঢাকা/মামুন খান/জেনিস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়