ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা

মাগুরা সংবাদদাতা : পূজা আসলে কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। প্রতিমা তৈরির আয় থেকে সারা বছর সংসারের চাকা ঘোরে। প্রতিমা তৈরির কাজ থেকেই একটু সচ্ছলতা।

বাবার কাছ থেকে হাতেখড়ি- মৃৎশিল্পী অরবিন্দ বিশ্বাসের (৬০)। সরস্বতী পূজার আগের দিন রোববার, ঘড়ির কাটায় দুপুর আড়াইটা। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ছোট এক গ্রাম কানাইনগর। শহরের পাশে হলেও একবারে শান্ত সুনিবীড়। ঘন সবুজ গাছে ঘেরা। এখানেই বাস করেন মৃৎশিল্পী অরবিন্দ বিশ্বাস।

বাড়ির এক চিলতে উঠানের সবটুকু জুড়ে ছোট, মাঝারি, বড়- সব আকৃতির সরস্বতী প্রতিমা। রঙসহ প্রতিমা তৈরির নানা উপকরণ ছড়ানো ছিটানো চারদিক। কোনো প্রতিমায় রঙের কাজ শেষ, কোনোটিতে চলছে। বিকেলের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।

মৃৎশিল্পী অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, বাবা কুটিস্বর বিশ্বাস প্রতিমা তৈরির কাজ করতেন। ১৫ বছর বয়সে বাবার কাছে হাতেখড়ি। আর কোনো কাজ জানেন না। পড়ালেখা শেখেননি। জমিজমা নেই বললেই চলে। এই কাজ করে স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ের সংসার চলে।

সারা বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ থাকে। দুর্গা, কালি, কার্তিক ও সরস্বতী পূজায় বেশি বেশি প্রতিমা তৈরি করেন। বিভিন্ন আকৃতির ২০-৩০টি প্রতিমা তৈরি করেন। বাড়ি থেকে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যান। অর্ডার পেলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে গিয়েও প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। একেকটি প্রতিমা আকার ভেদে ৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকায় বিক্রি হয়। সব খরচ বাদে ২০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। এই কাজে তাকে স্ত্রী পলি রানী বিশ্বাস ও ছেলে অনুপ কুমার বিশ্বাস সহযোগিতা করেন। 

সদরের বসুরধুলজুড়ি গ্রাম থেকে সরস্বতী প্রতিমা কিনতে এসেছেন কালিপদ রায়। তিনি বলেন, অনেক বছর ধরে তিনি এই গ্রাম থেকে প্রতিমা কেনেন। বাড়িতে পূজা করার জন্য দেড় হাজার টাকা দিলে সরস্বতী প্রতিমা কিনেছেন।

স্ত্রী পলি রানী বিশ্বাস জানান, তারা বংশ পরম্পারায় প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছেন। সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এই পেশায় এখন টিকে থাকা কঠিন হচ্ছে।

ছেলে অনুপ কুমার বিশ্বাস জানান, তিনি স্থানীয় কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাবার পেশায় আসার ইচ্ছা নেই। পড়ালেখা করে চাকরি করতে চান। 

কানাইনগর গ্রামের বাসিন্দা বিনয় কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, প্রতিমা তৈরির মৃৎশিল্পীর এখন অভাব। নতুন প্রজন্মের কেউ এই পেশায় আসতে চায় না। অরবিন্দ বিশ্বাস তার বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে আছেন।



রাইজিংবিডি/মাগুরা/২৫ জানুয়ারি ২০১৮/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়