ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

প্রবাসীদের আয় সাড়ে দশ হাজার মিলিয়ন ডলার

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১১, ১৯ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রবাসীদের আয় সাড়ে দশ হাজার মিলিয়ন ডলার

কেএমএ হাসনাত : মাত্র সাত মাসে প্রবাসিদের আয় সাড়ে দশ হাজার মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।

যা দেশের অর্থনীতির ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১০ হাজার ৫২১ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষন ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকিংখাতে নানা জটিলতার সুযোগ নিতো হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। ফলে হুন্ডির মাধ্যমে আসা ওইসব অর্থ কার্যত দেশের অর্থনীতিতে কোন ভূমিকা রাখতো না। প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশীরা ব্যাংকিংখাতের জটিলতার কারনে অনেকেই ব্যাংক বহির্ভূত ব্যবস্থা বা হুন্ডির মাধ্যমে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠাতো। বর্তমানে অনলাইনসহ ব্যাংকিং মাধ্যমে টাকা পাঠানো অনেক সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। সরকার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপর আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার ঘোষনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

রেমিট্যান্স খাতে প্রণোদনা প্রসঙ্গে অর্থ সচিব বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপর ২ শতাংশ প্রণোদনার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি নিয়ম অনুসরণ করে রেমিট্যান্স পাঠাতে হবে। এককালীন ১৫০০ ডলার পাঠালে কোন প্রশ্ন করা হবে না। এর বেশি রেমিট্যান্স পাঠালেই তাদেরকে নিরীক্ষার আওতায় আসতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০০৯ সাল থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। সেবছর বিভিন্ন দেশ থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ১১ হাজার ০০৪ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার। এরপর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

মাঝে বিশ্ব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা কারনে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমেছিল। ২০১৬ সালে রেমিট্যান্স আসে ১৩ হাজার ৬০৯ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৭ সালে আসে ১৩ হাজার ৫২৬ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে তা আবার ঘুরে দাঁড়ায়। প্রবাস থেকে রেমিট্যান্স আসে ১৫ হাজার ৫৪৪ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার।

চলতি ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ হাজার ৫২১ দশমিক ৬৯ ডলার। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর গত বছরের চেয়ে রেমিট্যান্স বেশি আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। সাত মাসে দেশটি থেকে এসেছে ২ হাজার ১৮ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলার। এরপরেই রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ দেশটি থেকে এসেছে ১৬২৬ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার।

সাত মাসে বাহরাইন থেকে এসেছে ২৭৫.২৮ মিলিয়ন ডলার। কুয়েত থেকে ৯৭৩.৫৬ মিলিয়ন ডলার। ওমান থেকে এসেছে ৬৯০.৬৩ মিলিয়ন ডলার। কাতার থেকে এসেছে ৬৪৭.৬২ মিলিয়ন ডলার। ইতালি থেকে এসেছে ৪৪৭.৩৩ মিলিয়ন ডলার। মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ৭৪৮.৩৬ মিলিয়ন ডলার। সিঙ্গাপুর থেকে ২৩৮.৭৬ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে ৭৯৩.৬৮ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ১১৩৩.৩১ মিলিয়ন ডলার। জার্মানি থেকে ৪০.৫৪ মিলিয়ন ডলার। জাপান থেকে ৩৫.৪৯ মিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৭৮ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার। অস্টেলিয়া থেকে ৩৮.০৬ মিলিয়ন ডলার। লিবিয়া থেকে ২.৬৮ মিলিয়ন ডলার। ইরান থেকে ০.০৭ মিলিয়ন ডলার। হংকং থেকে ১২.২২ মিলিয়ন ডলার। এবং অন্যান্য দেশ থেকে এসেছে ৭২১.০৮ মিলিয়ন ডলার।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ আগস্ট ২০১৯/হাসনাত/নবীন হোসেন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়