ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে যা ভাবছেন বাম নেতারা

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ২৩ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে যা ভাবছেন বাম নেতারা

নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেটকে গণবিরোধী, শ্রমজীবীদের স্বার্থবিরোধী ও গরিব মারা বাজেট বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশের বাম দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। তাদের অভিযোগ—এই বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর প্রতি গুরত্ব দেওয়া হয়নি।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুন)  নতুন  অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি।   

জানতে চাইলে প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাবেকমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘গরিবরা আরও গরিব হবে। এখনো বাজেটে অপ্রত্যক্ষ করই প্রধান। যা সাধারণ মানুষকে আহত করে। বাজেটে সম্পদ ও মুনাফার ওপরে কর আরোপ করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন,  ‘স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ নিতান্তই অপ্রতুল।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট জনস্বার্থ বিরোধী। বাজেটে ভ্যাটের আওতা বাড়ানো হয়েছে। তাতে সাধারণ মানুষ পরোক্ষ কর দিতে বাধ্য হবেন। কিন্তু যারা বৈধ-অবৈধ সব উপায়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে।’

খালেকুজ্জামান বলেন, ‘দেশে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বাড়ছে। করোনা দুর্যোগ সাধারণ মানুষের আয় কমিয়ে ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। বরং প্রবাসীদের ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিদেশফেরত শ্রমিকদের  সমস্যা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট অগ্রহণযোগ্য। বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি ও গ্রামীণ খাত প্রত্যাশা অনুযায়ী গুরুত্ব পাইনি। বাজেটে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রেখে ৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই। আয় যেখানে সংকুচিত, ব্যয় ও ঋণের মাত্রা যেখানে বেশি, সেখানে মাত্রাতিরিক্ত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কেবল হতাশার জন্ম দেবে।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক ডা. এম.এ সামাদ বলেন, ‘এই বাজেট শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থবিরোধী। এই বাজেট  লুটেরা ধনিক-শ্রেণির বাজেট।’

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এর সভাপতি ডা. এম এ করিম বলেন, ‘গতানুগতিক, জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী। জনস্বার্থে দেশবাসীকে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘বাজেটে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও শ্রমজীবী জনগণের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই।’

বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলী খান কলিন্স বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের বিপুল পরিমাণ বেকারের কর্মসংস্থান ও প্রণোদনা নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য নেই।’  তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী শ্রমিকরা চাকরি হারাচ্ছেন। দেশে ফিরে আসছেন। বাজেটে এই বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থানের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বা আপৎকালীন বেকারভাতা-প্রণোদনা বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য থাকা উচিত ছিল।’

সাব্বাহ আলী খান আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুফল জনগণ ভোগ করবে, যদি বররাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার, দুর্নীতি বন্ধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু এসব বিষয়ে অর্থমন্ত্রী নীরব।’  বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলেও খেলাপি ঋণ আদায় এবং ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।


রাইজিংবিডি/নঈমুদ্দীন/এনই

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়