ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

প্রেম নিবেদন নিয়ে ঈর্ষা ও পূর্ববিরোধে খুন হয় স্কুলছাত্র হৃদয়

জে.খান স্বপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০২, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রেম নিবেদন নিয়ে ঈর্ষা ও পূর্ববিরোধে খুন হয় স্কুলছাত্র হৃদয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : প্রেম নিবেদনকে কেন্দ্র করে  ঈর্ষা এবং পূর্ববিরোধের জের ধরে হত্যা করা হয় বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র সাইদুর রহমান হৃদয় গাজীকে (১৭)।

রোববার এক সংবাদ সন্মেলনে এ হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন। বিকেল ৪ টায় পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এ সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয়।

পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান হৃদয় গাজীর বন্ধু আহাদ একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে পছন্দ করতো। আর ওই ছাত্রীকেই পছন্দ করে প্রেম নিবেদন করেছিল সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র সাঈদ আবেদীন আবদুল্লাহ। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঈর্শা তৈরি হয়।

এর এক মাস আগে শহীদ আরজু মনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (সাবেক সরকারি কাউনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়) অফিস সহকারী সাব্বির সরকারকে স্কুলসংলগ্ন এলাকায় ট্রাউজার উল্টো পরা অবস্থায় দেখে অপত্তিকর উক্তি করে সাঈদ ও তার ছয় সাত জন সহপাঠী। স্কুলের অফিস সহকারীর উদ্দেশে অশালীন উক্তি করায় সাঈদকে গালমন্দ করে হৃদয় গাজী ও তার সহপাঠীরা । এ সময় উভয়ের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।

সবমিলিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আর এই বিরোধের জের ধরেই গত শনিবার পরেশ সাগর সংলগ্ন মাঠে হৃদয় গাজীকে একা পেয়ে সাঈদ ও তার সাত আট জন সহপাঠী হামলা চালায়। এ সময় হৃদয় গাজীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে হৃদয় গাজীর মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে হৃদয় গাজীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয় তার সহপাঠী সাজিদ রাফি, রুবাইয়াত মাহবুব ও ইয়ামিন নাহিয়ান।

এ ঘটনার পর পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিনের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ডিসি (দক্ষিণ), ডিসি (ডিবি), থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির সমন্বয়ে গঠিত একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও অপরাধীদের ধরার জন্য সাঁড়াশি অভিযান চালায়।

এ অভিযানে সাঈদ ও রাজু হোসেন মাঝিকে আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি নিয়ে পরে অভিযান চালিয়ে ইমন সিকদার, মুরাদ হোসেন, নূরন্নবী নাহিদ ও সৈয়দ মো. ইয়াসিন শান্তকে আটক করা হয়। রোববার সকালে শান্তর বাসা থেকে ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।

আটককৃতদের মধ্যে সাঈদ ও রাজুকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আটকদের মধ্যে মুরাদ হোসেন মূল ঘাতক বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) হাবিবুর রহমান, উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আব্দুর রউফ খান, উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম কুমার পাল।

আটককৃতরা হলো বরিশাল নগরীর কবি নজরুল ইসলাম সড়কের বাসিন্দা মো. রাজু হোসেন মাঝি ও সাঈদ আবেদীন আব্দুল্লাহ ওরফে রাহাত (১৭), বৈদ্যপাড়া বিএম কলেজের পেছনের এলাকার ইমন সিকদার (১৭), আলেকান্দা কাজিপাড়া এলাকার মুরাদ হোসেন (১৫), একই এলাকার নূরন্নবী নাহিদ (১৫) ও হুদাকুটির বিএম স্কুলের সামনের এলাকার সৈয়দ মো. ইয়াসিন শান্ত (১৭)।

নিহত হৃদয় গাজীর বাবা মো. শাহীন গাজী বাদী হয়ে শনিবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাঈদ ও অজ্ঞাত সাত আট জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।



রাইজিংবিডি/বরিশাল/২৯ জানুয়ারি ২০১৭/জে. খান স্বপন/রুহুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়