ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

প্রয়োজন সর্বাত্মক প্রতিরোধ

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ৯ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রয়োজন সর্বাত্মক প্রতিরোধ

দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট এবং এর কাঁচামাল প্রবেশ করে থাকে কক্সবাজারে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পথে। আর এই ইয়াবার ভয়ানক  ছোবলে দেশের তরুণ-যুবক সমাজ নিজেদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। অথচ দেখা যাচ্ছে, এই রোহিঙ্গারা নানা অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এমনকি ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক পাচারের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে আমাদের দেশে। ইয়াবা-মাদকে জড়িত হয়ে আমাদের তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন অপরাধে ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

দেশের যুবসমাজকে এই ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে এবং ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শনিবার কক্সবাজার সফরকালে একগুচ্ছ প্রকল্প উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, কক্সবাজারের একটি বদনাম আছে। এখান থেকে ইয়াবা সরবরাহ করা হয় সারাদেশে। যে কোন মূল্যে এই ইয়াবা সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। যে বা যারা ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি পেতেই হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি সর্বস্তরের জনগণের প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পাশাপাশি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের প্রতি। যে কোন মূল্যে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের ছোবল থেকে ছেলে-মেয়েদের রক্ষা করার জন্য বলেন।

বস্তুত ইয়াবার ভয়াল থাবায় অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। ইয়াবার আগ্রাসন থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে  যেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তেমনি সন্তানদের প্রতি বাবা-মার বিশেষ নজর রাখাও একান্ত প্রয়োজন।তারা কোথায় যায়, কী করে, কার সঙ্গে সময় কাটায় সেসবের প্রতি নজর রাখতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক ইয়াবা ট্যাবলেট মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পথে প্রবেশ করে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের অভিযানে প্রায় প্রতিদিন ধরাও পড়ে বিপুল পরিমাণে। সীমান্তে কঠোর তৎপরতা এবং গোয়েন্দা নজরদারিও রয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর। কিন্তু তার পরও এর অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না।

এর কারণ, স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটসহ বিত্তশালী ব্যক্তিদের হাত রয়েছে এতে। ইয়াবা পাচারের অভিযোগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পরিবারের সম্পৃক্ততার অভিযোগে জেল-জরিমানাও হয়েছে। তা সত্ত্বেও ইয়াবার ছোবল ঠেকানো যাচ্ছে না। তবে এলাকার জনগণ  সততা ও সদিচ্ছার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসলে সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ইয়াবার চোরাচালান ঠেকানো সম্ভব হতে পারে। কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে অনেকটা তারই প্রতিফলন ঘটেছে।

আমাদের তরুণ সমাজকে রক্ষা এবং তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঠেকাতে হলে ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন রকম মাদকের সর্বাত্মক প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মে ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়