ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ববির আন্দোলন অব্যাহত, প্রাক্তন রেজিস্ট্রার চাকরিচ্যুত

জে.খান স্বপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ১০ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ববির আন্দোলন অব্যাহত, প্রাক্তন রেজিস্ট্রার চাকরিচ্যুত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত হয়েছেন প্রাক্তন রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম।

আন্দোলনের ১৬ তম দিনে আজ বুধবার কুয়াকাটা-বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তারা।  বেলা ১১টা থেকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ভিসির পদত্যাগ দাবী, ভিসির রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যাশা ছিল সিন্ডিকেটের সভায় উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক কোনও ঘোষণা আসবে। কিন্তু সেটা না পাওয়ায় রাত ১১টার দিকে আমরা বৈঠক করেছি অন্দোলন চলবে।

তারই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে কাফনের কাপড় পরে কুয়াকাটা-বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ ও আমরণ অনশন পালনের সিদ্ধান্ত  হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সভায় সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাবেক রেজিষ্ট্রার মনিরুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার কলাবাগানে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজো অফিসে সিন্ডিকেটের সভার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক রেজিষ্ট্রার মনিরুল ইসলামকে এর আগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।’



উল্লেখ্য, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রত্যাশী এক তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ ওঠে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও প্রমাণসহ রেজিস্ট্রার মনিরুলের বিচারের দাবিতে ভিসির কাছে লিখিত আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ঘটনা তদন্তে ভিসি সিন্ডিকেটের ৩ সদস্যের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় সিন্ডিকেট সভা রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে নৈতিক স্খলনের দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। নতুন রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. হাসিনুর রহমানকে।

উপাচার্য জানান, ‘অপকর্ম ঢাকতে সাবেক ভিসি, বহিষ্কৃত রেজিস্ট্রার, একাউন্টেন্ট ও বর্তমান ট্রেজারারসহ কিছু লোক শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অর্থের যোগান দিচ্ছেন। মূলত এ আন্দোলন নিয়ে সাবেকরা লোকাল গেম খেলছেন।’

উপাচার্য জানান, ‘২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে যা হয়েছে তার পুরোটাই সাজানো এবং পূর্ব পরিকল্পিত। কেননা শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিষয়টিতে তারা আগেই প্রতিবাদ করতে পারতো। তা না করে প্রতিবাদ করার জন্য কেন স্বাধীনতা দিবসের দিনটিই ওরা বেছে নিলো? আমি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোক।’

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করলে ২৭ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২৯ মার্চ উপাচার্য তার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি দেন। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।



রাইজিংবিডি / বরিশাল/ ১০ এপ্রিল ২০১৯/ জে. খান স্বপন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়