ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা অব্যাহত

জে.খান স্বপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ৭ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : ১২ দিনের অচলাবস্থার পর বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সমঝোতা সভায় রোববার থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হলেও ক্লাস কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি শিক্ষার্থীরা।

শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত নোটিশে আজ রোববার থেকে সব আবাসিক হল ও ডাইনিং চালু করার পাশাপাশি ক্যাম্পাসের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও কার্যত তা হয়নি। 

আজ ১৩তম দিনেও দিনভর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক এবং একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে থেমে থেমে বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন।

কাগজে-কলমে ক্যাম্পাস খুললেও বিভিন্ন গেটে তালা ঝুলানো থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যান। এর আগে আন্দোলনের ১২তম দিন শনিবার বরিশাল সার্কিট হাউজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চার ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন সদর আসনের এমপি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি ও শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল।

বৈঠক শেষে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হককে আর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন না করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মাধমে উপাচার্যকে ছুটি দিয়ে কিংবা পদত্যাগ করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তিনি।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইদিন রাতে পরের দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর নোটিস জারি করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান।

 



কিন্তু সন্ধ্যায় বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা তাকে ছুটিতে পাঠানোর প্রমাণপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে সব প্রশাসনিক এবং একাডেমিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দেয়। ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন সঙ্গীত পরিবেশন করে তারা। পড়াশোনায় ক্ষতি হলেও উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা ছুটির লিখিত প্রমাণপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতা রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পদোন্নতিসহ ১২ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে পৃথক মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা। তারা তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

কারোর চাপের মুখে পদত্যাগ কিংবা ছুটিতে না যাওয়ার কথা বলেছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক। কোনো অন্যায় আবদারের কাছে মাথানত করবেন না উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, তাকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন চ্যান্সেলর (রাষ্ট্রপতি)। চ্যান্সেলর যদি মনে করেন তার পদত্যাগ কিংবা ছুটিতে যাওয়া প্রয়োজন, তাহলে তিনি সেই আদেশ মানতে বাধ্য।

তিনি উপাচার্য থাকলে যাদের স্বার্থহানি হওয়ার আশংকা আছে, তারাই এই আন্দোলনে পেছন থেকে ইন্ধন দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক।



রাইজিংবিডি/বরিশাল/৭ এপ্রিল ২০১৯/জে. খান স্বপন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়