ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বর্তমান যুগে ক্লিওপেট্রার পারফিউম!

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ২২ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বর্তমান যুগে ক্লিওপেট্রার পারফিউম!

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : ইতিহাসের সেরা সুন্দরীদের নাম স্মরণ করলে সবার আগে যেই নামটি মাথায় আসে তা হলো ক্লিওপেট্রা। তিনি ছিলেন মিশরের শেষ রানী। ৫১ থেকে ৩০ খ্রিষ্টপূর্ব পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন এই অপরূপ সুন্দরী রানী।

প্রাচীন পৃথিবীর এই সুন্দরী রানীর ব্যবহৃত পারফিউম বা সুগন্ধি পুনরায় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মিশরের রাজধানী কায়রোর কাছে দীর্ঘ এক দশক ধরে পরিচালিত একটি খনন কাজ চালিয়ে ২০০০ হাজার বছরের পুরোনো এই সুগন্ধি তৈরির উপাদানগুলো আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। গন্ধরস, এলাচ, দারুচিনি এবং জলপাই তেলের মিশ্রণে পুনরায় তৈরি করেছেন ক্লিওপেট্রার ঘন এবং চটচটে সুগন্ধি।

বলা হচ্ছে, রানী ক্লিওপেট্রার এই সুগন্ধিটি বর্তমান সময়ের সুগন্ধির তুলনায় অনেক বেশি ঘন এবং শক্তিশালী। এর সুগন্ধ শরীরে দীর্ঘসময় বজায় থাকতে পারে।

এই প্রকল্পের অন্যতম গবেষক প্রফেসর লিটম্যান বলেন, ‘ভীষণ রোমাঞ্চকর ব্যাপার হলো এমন একটি সুগন্ধি- ২০০০ বছর ধরে যার গন্ধ কেউ পাচ্ছে না এবং ক্লিওপেট্রা এটি ব্যবহার করে থাকতে পারেন। এটি প্রাচীন বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সুগন্ধি।’

ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ের দুজন প্রফেসরের নেতৃত্বে মিশরের টেল-এল তিমাই এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননে একটি অ্যাম্ফোরার (গ্রিক ডিজাইনের সুগন্ধি বোতল) মধ্যে সুগন্ধিটির অবশিষ্টাংশ মিলেছে।

দীর্ঘ এক দশক ধরে এই খনন প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রফেসর রবার্ট লিটম্যান এবং প্রফেসর জে সিলভারস্টেইন। এখানে মাটি খুড়ে আবিষ্কার হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে তৈরি একটি কমপ্লেক্সের ধ্বংসাবশেষ  এবং সম্ভাব্য বসবাসকারীর পরিচয়ও ২০১২ সালে আবিষ্কার করে প্রত্নতাত্ত্বিক দলটি। প্রফেসর লিটম্যান বলেন, ‘এর চারপাশে প্রচুর রুপা ও সোনার গহনা পাওয়া গেছে, যা সুগন্ধের জন্য আর্থিক বিনিময়ের উপস্থিতি নির্দেশ করে। অ্যাম্ফোরাতে থাকা উপাদানের রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, এটি একটি প্রাচীন সুগন্ধি।’

প্রাচীন গ্রীক গ্রন্থে সূত্রের ভিত্তিতে এই সুগন্ধি পুনরায় তৈরিতে গবেষকরা প্রাচীন মিশরীয় সুগন্ধি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়েছেন। ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক মিউজিয়ামে প্রাচীন এই সুগন্ধটি বর্তমানে প্রদর্শন করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে প্রফেসর লিটম্যান বলেন, ‘বর্তমান আধুনিক সময়ের সুগন্ধিগুলোর তুলনায় প্রাচীন সুগন্ধি সম্ভবত বেশি স্থায়ী হয়। প্রাচীন সুগন্ধিগুলো এখনকার তুলনায় অনেক বেশি ঘন ছিল, অনেকটা অলিভ অয়েলের মতো।’

প্রাচীন সুগন্ধিটি যদিও যথাযথ উপাদানে নিখুঁত ভাবে পুনরায় তৈরি করা হয়েছে কিন্তু নিশ্চিতভাবে এটা আসলে বলা কঠিন যে, ক্লিওপেট্রা কোন সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। 

ক্যালিফোর্নিয়ার একটি পারফিউম ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ম্যান্ডি আফটেলের বিশ্বাস- মিশরের এই শাসক সম্ভবত অনন্য ঘ্রাণের নিজস্ব সুগন্ধি ব্যবহার করতেন এবং সেটি কেবলমাত্র তার জন্যই তৈরি হতো।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ আগস্ট ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়