ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বর্ষায় অপরূপ বান্দরবান

বাসু দাস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ৭ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বর্ষায় অপরূপ বান্দরবান

এস বাসু দাশ : সারি সারি সবুজ পাহাড় আর মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে মানা নেই। বৃষ্টির সময় প্রকৃতি যেন তার সবটুকু ঢেলে দেয় বান্দরবানে- নতুন করে সাজে বৃষ্টিস্নাত সবুজ পাহাড়। দেখে মনে হবে সারি সারি সেই সবুজ গালিচা রয়েছে আপনারই অপেক্ষায়। আপনার বিস্ময়মিশ্রিত প্রশংসা বাণী তার প্রাপ্য। সত্যি বলতে বর্ষায় এমন এক ভিন্নরূপে দেখা যায় এই পর্যটন শহরকে।

আমাদের দেশের ভ্রমণপিপাসুরা ভ্রমণের জন্য শীত মৌসুমকে উপযুক্ত মনে করেন। অনেকেই জানেন না, বৃষ্টির সময় পাহাড়ঘেরা জেলাটি যেন একটি সবুজ কার্পেটের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। যেদিকে দুচোখ যাবে সবুজে সবুজে বর্ণিল। অবিরাম বর্ষণের জলধারার পরশে পাহাড়ের বৃক্ষরাজি নব যৌবন লাভ করে। মেঘ আর পাহাড়ের সম্পর্কের কথা তো নতুন করে বলার নেই। তবুও বলতে হয়, পাহাড়ের সঙ্গে আকাশের সারি সারি মেঘের সর্ম্পকের নতুন মাত্রা এনে দেয় এই ঝুম বরষা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়, পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা শত শত ঝরনা ধারা।

এ ছাড়া শহরের কাছে নীলাচল, চিম্বুক, জীবননগর আর নীলগিরির ওপর দাঁড়িয়ে মেঘ স্পর্শ করার ইচ্ছে হলে আপনাকে অবশ্যই ভ্রমণের জন্য এ সময় বেছে নিতে হবে বান্দরবান। এটুকু পড়ে নিশ্চয়ই মন চাইছে মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে। তবে আর দেরি কেন, জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের স্বচ্ছ জলে, ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ের স্রোতে আদিবাসীদের গ্রামে বা নীলদিগন্তে। ক্লান্ত  শরীর জুড়িয়ে নিতে পারেন এই আদিবাসীদের মাচাং ঘরে।

এ ছাড়া কৃষি প্রধান দেশের বিভিন্ন জেলার চাষাবাদের চেয়ে পাহাড়ে ভিন্ন চাষাবাদ জুমচাষ আপনার নজর কারবে নিঃসন্দেহে। শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে দেখতে পাবেন মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স। আর ১৮শ’ ফিট উঁচু নীলাচল থেকে সবুজের চাদরে ঢাকা বান্দরবান। বান্দরবান-চিম্বুক রোডের ৮ কিলোমিটারে রয়েছে পাহাড়ি ঝরনা শৈলপ্রপাত। ঝরনা থেকে গড়িয়ে পড়া জলরাশির স্রোতের কারণে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ঝরনায় এখন না নামাই ভালো।



২৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড়, চিম্বুক থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে নীলদিগন্ত পর্যটনস্পট। যেখান থেকে দেখে নিতে পারেন পাহাড়ের গা বেয়ে ভেসে বেড়ানো সারি সারি মেঘমালার চিত্র। এই ধরনের শত শত পাহাড় তার রূপ প্রদর্শনে ভিন্ন বাহার নিয়েই যেন আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এই পাহাড়গুলোতে না উঠলে বান্দরবান ভ্রমণের মূল আনন্দ অধরা থেকে যাবে।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভারতের দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যান। অথচ পর্যাপ্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে এবং জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো আরও উন্নত করা গেলে আমাদের বান্দরবানের সৌন্দর্য ভারতের দার্জিলিংকেও হার মানাবে।

যাতায়াত : ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে চট্টগ্রাম। তারপর চট্টগ্রাম থেকে সোজা বান্দরবান। বাংলাদেশের অনেক জায়গা থেকে সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে বান্দরবান পর্যন্ত সরাসরি নন এসি বাস ভাড়া জনপ্রতি ৬২০ টাকা, এসি ১২০০ থেকে ১৫০০টাকা। এস আলম, হানিফ, ইউনিক, শ্যামলি, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি বাস ছাড়ে ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ, কমলাপুর রেল স্টেশনের বিপরীত কাউন্টার থেকে।

চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান : বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে পূরবী এবং পূর্বাণী নামক দুটি নন-এসি বাস আছে। ৩০ মিনিট পরপর বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ১২০ টাকা।

কোথায় থাকবেন : হোটেল ফোর স্টার, হোটেল হিলটন, হোটেল হিলভিউ ,হোটেল সাঙ্গু, হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল প্লাজা, হোটেল গ্রীন হিল, হোটেল হিল বার্ড, হোটেল পূরবী, হোটেল রয়েল ছাড়াও আরো অনেক হোটেল আছে। ভাড়া ৪শ’ থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত প্রতি দিন যেখানে আপনি অনায়াসে থাকতে পারেন।


 

রাইজিংবিডি/বান্দরবান/৭ আগস্ট ২০১৭/রুহুল/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়