ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

বাড়তি ভাড়ায় দিশেহারা যাত্রীরা

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ৯ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাড়তি ভাড়ায় দিশেহারা যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। রোববার সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পাড়ি দিয়ে রাজধানীতে ফিরছে উত্তরবঙ্গের লোকজন। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ না থাকলেও রয়েছে যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ।

ঈদ শেষে টাঙ্গাইল থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। বাসভাড়া বৃদ্ধিতে দিশেহারা যাত্রীরা। বাসভাড়া লাগামহীন বৃদ্ধিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঢাকায় বসবাসরত জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। তারা ভাড়া বৃদ্ধির প্রবণতামুক্ত পরিবহন আইনের দাবি করেছেন। তবে বাসমালিকদের দাবি, বাসভাড়া কিছুটা বৃদ্ধি করা হলেও যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য অন্যান্য বারের তুলনায় চলাচল করছে পর্যাপ্ত বাস। টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা ভাড়া কিছুটা বেশি দিলেও ঢাকা থেকে ওই বাসগুলোই টাঙ্গাইল ফিরছে যাত্রীশূন্য হয়ে।

বাসমালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির বাস ৮ শতাধিক। এরমধ্যে রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে টাঙ্গাইল এবং টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় চলাচলরত এসি বাস ১২টি। এছাড়া, সরাসরি নন-এসি বাস সার্ভিসের মধ্যে নিরালা সুপার সার্ভিসের বাস ৫৩টি, ধলেশ্বরী বাস ৫৬টি আর ঝটিকা বাসের ১৪টি। এর মধ্যে সোনিয়া আর সকাল সন্ধ্যা নামে দুটি এসি বাস সার্ভিসের গাড়ির নির্ধারিত ভাড়া ২৫০ টাকা, নিরালা সুপার সার্ভিসের ভাড়া ১৬০ টাকা, ধলেশ্বরী ও ঝটিকা সার্ভিসের ভাড়া ১৩০ টাকা।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা টাঙ্গাইল। প্রায় ৪০ লাখ মানুষের আবাসস্থল এই জেলা। এ জেলার উল্লেখযোগ্য নারী ও পুরুষ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাকরি অথবা ব্যবসা করেন। জীবনের তাগিদে নিজ জেলা আর পরিবার-পরিজন ছেড়ে অন্যত্র কর্মস্থল নির্ধারণ করলেও বছরের অন্যান্য মাসে পরিবার পরিজনের পাশে থাকতে না পারলেও বছরের দুই ঈদের ছুটিতে পরিবারের সংস্পর্শে আসেন জেলার এই কর্মজীবী মানুষগুলো। তবে প্রতি ঈদেই এভাবে বাসভাড়া বৃদ্ধি পেলে চরম হয়রানির শিকার হন তারা। ঈদের আগে ঘরে ফেরার পথে ঈদ বোনাস হিসেবে বাসভাড়া কিছুটা বেশি নিলে তেমন কষ্ট না লাগলেও ফেরার পথে এই বেশি ভাড়া নেওয়াটা খুবই দুঃখজনক।

যাত্রী সুমন মিয়ার অভিযোগ, এসি বাস সার্ভিস সোনিয়া ও সকাল সন্ধ্যার ২৫০ টাকার ভাড়া যাত্রীদের বেকায়দায় ফেলে আদায় করছে ৪০০ টাকা। তবে এই অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধি সত্বেও নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসরিন বলেন, যাতায়াতের উভয় সময়ই তাদের নির্ধারিত বাসভাড়ার অধিক টাকা দেওয়াটা অনেকটাই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতি রোধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করি।

বাসভাড়া বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন জানান, অন্যান্য জেলার মতো টাঙ্গাইলে বাসভাড়া বৃদ্ধি পায়নি। এসি সার্ভিসে ১৫০ ও নন-এসি সার্ভিসের নিরালা সুপারে ৯০, ধলেশ্বরী সার্ভিসে ৭০ আর ঝটিকায় বেড়েছে মাত্র ২০ টাকা। টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী এই বাসগুলো বেশি ভাড়ায় গেলেও ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে ফিরছে যাত্রীশূন্য হয়ে। এই পরিমাণে ভাড়ার টাকা বেশি যদি বাস যাত্রীরা না দেন, তাহলে দেখা যাবে ঢাকা টাঙ্গাইলের যাত্রীরা বাস সংকটে পরবেন ।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, ভাড়া বৃদ্ধি না করার জন্য মালিক ও শ্রমিক সমিতিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তা সত্বেও যদি ভাড়া বৃদ্ধির মাধ্যমে যাত্রীদের হয়রানি করা হয়, তবে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/৯ জুন ২০১৯/শাহরিয়ার সিফাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়