বিক্রি হচ্ছে মৃণাল সেনের ফ্ল্যাট
বরেণ্য চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। দক্ষিণ কলকাতার পদ্মপুকুর রোডের ৩৮ নম্বর বাড়ির চার তলায় মৃণাল সেনের তিন কামরার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এই ফ্ল্যাটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
অবশেষে বিক্রি করা হচ্ছে মৃণাল সেনের স্মৃতিবিজড়ির সেই ফ্ল্যাট। ২০১৭ সালে মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেন মারা যান। একমাত্র ছেলে কুণাল সেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে থাকেন। ফ্ল্যাটটি দেখাশোনার কেউ নেই। এজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়েছে, মৃণাল সেনের স্মৃতিধন্য অধিকাংশ জিনিস আর ওখানে নেই। পরিচালকের অধিকাংশ চিঠি, সিনেমার পাণ্ডুলিপি, সিনেমার স্থিরচিত্র লন্ডনসহ কয়েকটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ফিল্মের ছাত্রছাত্রীদের গবেষণার জন্য। যে শয্যায় মৃণাল সেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, সেটিও গত সপ্তাহে পিপলস রিলিফ কমিটির সভাপতি, তথা বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু নিজে এসে নিয়ে গেছেন।
২০০৩ সাল থেকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এই ফ্ল্যাটেই কাটিয়েছেন মৃণাল সেন। পুত্র কুণাল দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে বসবাস করছেন। কলকাতায় বাড়িটি তালাবদ্ধ। আর চাবি রয়েছে মৃণাল সেনের চিকিৎসকের কাছে। তার ভাষায়, ‘কুণাল সেন বিদেশে থাকেন। ফ্ল্যাট ও অন্যান্য জিনিস দেখভালের মতো কেউ নেই। আমি মাঝেমধ্যে আসি। কিন্তু সবসময় সম্ভব হয় না। বাড়ি বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই।’
মৃণাল সেনের ওই ফ্ল্যাটে অন্তত দুই হাজার বই রয়েছে। বেশিরভাগ বই সিনেমা সংক্রান্ত। দেশ-বিদেশের পরিচালকদের থেকে যেমন বই উপহার পেয়েছিলেন, তেমনই প্রচুর বই কিনেছিলেন তিনি। রয়েছে বিভিন্ন সময়ে পাওয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
এ প্রসঙ্গে মৃণাল সেনের চিকিৎসক বলেন, ‘মৃণাল সেনের মৃত্যুর পরই বিদেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আগ্রহ দেখিয়েছিল তার তৈরি সিনেমার স্থিরচিত্র ও পাণ্ডুলিপির প্রতি। কিছুদিন আগে সেগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মুম্বাইয়ের একটি সংগ্রহশালাও মৃণাল সেনের ব্যবহৃত কিছু জিনিস নিয়েছে। তার টেলিফোন ও চশমা নিয়েছে বহরমপুর সিনে সেন্ট্রাল। বেশ কয়েকটি জেলার লাইব্রেরিতে বই দেওয়া হয়েছে। সল্টলেকের আল আমিন মিশনকেও কিছু বই দেওয়া হয়েছে।’
ঢাকা/শান্ত
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন