ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৪ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ

প্রতীকী ছবি

আহমেদ শরীফ : মুসলিমদের আত্মশুদ্ধির মাস রমজান চলছে। তাই বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মসজিদগুলোতেও ভিড় বেড়ে চলেছে মুসলিমদের। মুসল্লিদের স্থান সংকুলানের দিক বিবেচনায় বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে বড় কয়েকটি মসজিদ সম্পর্কে চলুন জেনে নেই।

মসজিদ আল-হারাম, মক্কা, সৌদি আরব : বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ হলো মসজিদ আল-হারাম। মক্কায় পবিত্র কাবা শরীফকে ঘিরে গড়ে তোলা এই স্থান মুসলমানদের জন্য খুব পবিত্র। সেখানে প্রতি বছর বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ হজ পালন করতে যান। সে সময় ৪০ লাখের মতো মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন মাসজিদ আল-হারামে। মোট ৪ লাখ বর্গমিটারের বেশি জায়গাজুড়ে নির্মিত হয়েছে মাসজিদ আল-হারাম। এই মসজিদে ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নামাজ আদায় হচ্ছে। মসজিদটি বিশ্বের দশটি ব্যয়বহুল স্থাপনার মধ্যে একটি। এর সংস্কার কাজে ব্যয় হয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।

মসজিদে নববী, মদিনা, সৌদি আরব : মুসল্লী সংকুলানের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মসজিদ হলো মদিনার মাসজিদে নববী। ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (সা.) মসজিদটি নির্মাণ করেন। এরপর অনেক সংস্কারের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবস্থায় এসেছে মসজিদটি। বর্তমানের সবুজ গম্বুজ, যেখানে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সমাধি আছে, ১৮১৮ সালে সেই গম্বুজটি নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন অটোম্যান সম্রাট দ্বিতীয় মাহমুদ। ১৯৯৪ সালে মসজিদে নববীর চারপাশে ১০টি বিশেষ আকারের মিনার তৈরি করা হয়, যেগুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩৪১ ফুট।

ইমাম রেজা শ্রাইন, মাসহাদ, ইরান : ৮১৮ সালে ইরানের মাসহাদে নির্মিত হয় শিয়া মুসলিমদের সপ্তম ইমাম রেজার নামে বিশাল এক মসজিদ। এরপর মসজিদটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়। এই মসজিদ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়, যাদুঘরও আছে। মসজিদটির গম্বুজ স্বর্ণের তৈরি। মসজিদের সাতটি চত্বরের প্রতিটিতে ১ লাখ লোক নামাজ পড়তে পারেন। সে হিসেবে একসঙ্গে মসজিদটিতে সাত লাখ লোক নামাজ পড়তে পারেন।

ফয়সাল মসজিদ, ইসলামাবাদ, পাকিস্তান: পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ১৯৮৬ সালে নির্মাণ করা হয় ফয়সাল মসজিদ। দক্ষিণ এশিয়ায় সুন্নি মুসলিমদের সবচেয়ে বড় মসজিদ এটি। সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সালের নামে এই মসজিদটি তৈরি করা হয়। মসজিদটিতে কোনো গম্বুজ নেই, তবে চারটি বিশাল মিনার আছে, যেগুলো একেকটি ৩০০ ফুট লম্বা। বিশাল এই মসজিদটিতে একসঙ্গে ৩ লাখ মানুষ নামাজ পড়তে পারেন।

তাজ-উল-মসজিদ, ভোপাল, ভারত : নবাব শাহজাহান বেগম ১৮০০ সালের দিকে এই মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আর্থিক সংকটের কারণে ১৯৮৫ সালের আগে মসজিদটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। মোঘল স্থাপত্য শৈলী অনুকরণ করে নির্মাণ করা মসজিদটি দেখতে অনেকটা দিল্লির জামা মসজিদ ও লাহোরের বাদশাহী মসজিদের মতো। এই মসজিদে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারেন। এটি ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ।

ইসতিকলাল মসজিদ, জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া : ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ ইসতিকলাল ১৯৭৮ সালে নির্মাণ করা হয়। এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ। দুটি গম্বুজ, একটি মিনারসহ মসজিদটির পুলসহ একটি বাগান ও দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা আছে। এই মসজিদে মোট ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারেন।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো : ১৯৯৩ সালে মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কায় গড়ে তোলা হয় দ্বিতীয় হাসান মসজিদ। মসজিদের চত্বরে মনকাড়া কয়েকটি বাগান ও ৪১টি ফোয়ারা আছে। এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারেন।

বাদশাহী মসজিদ, লাহোর, পাকিস্তান : মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব ১৬৭৩ সালে পাকিস্তানের লাহোরে বাদশাহী মসজিদটি নির্মাণের নির্দেশ দেন। এক সময় এই মসজিদটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ ছিল। মোট ২৯,৮৬৭ বর্গ মিটার এলাকাজুড়ে মসজিদটি গড়ে তোলা হয়েছে। ভেতরে ৫ হাজার ও চত্বরে আরো ৯৫ হাজারসহ মোট ১ লাখ মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদটি বর্তমানে পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ এবং পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মসজিদ।

জামে মসজিদ, দিল্লি, ভারত : দিল্লির চাঁদনী চকে মোঘল সম্রাট শাহজাহানের নির্দেশে ১৬৪৪-৫৮ সালের মধ্যে বিশাল জামে মসজিদ নির্মিত হয়। সাদা মার্বেল ও স্যান্ডস্টোনে নির্মিত মসজিদটিতে চারটি টাওয়ার, তিনটি গেটওয়ে ও দুটি মিনার আছে। মসজিদটিতে হরিণের চামড়ার উপর লেখা কোরআনের একটি সংস্করণ আছে। মোট ৮৫ হাজার মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়তে পারেন।

সালেহ মসজিদ, সানা, ইয়েমেন : ২০০৮ সালে ইয়েমেনের সানায় নির্মাণ করা হয় দেশটির সবচেয়ে বড় এই মসজিদ। ইয়েমেনি ও ইসলামী ঐতিহ্যকে ধারণ করা হয় নির্মাণশৈলীতে। মসজিদ চত্বরে আছে দারুণ সব ফুলের বাগান। আধুনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনে তৈরি এই মসজিদে হাই কোয়ালিটি সাউন্ড সিস্টেম ও একটি লাইব্রেরি আছে। মসজিদটিতে একসঙ্গে ৪৪ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন।

তথ্যসূত্র : টপটেন এইচকিউ

পড়ুন :
 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়