ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বৃষ্টির অভাবে চা গাছে কুঁড়ি গজাচ্ছে না

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫১, ১৪ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বৃষ্টির অভাবে চা গাছে কুঁড়ি গজাচ্ছে না

উঁচু আর ঢালু স্থানে আড়াই থেকে তিন ফুট লম্বা চা গাছ। নিয়মিত বৃষ্টি হলে এই গাছে নতুন কুঁড়ি গজায়। বর্তমানে চা-পাতা উৎপানের মৌসুম। কিন্তু নিয়মিত বৃষ্টি নেই।

এরসঙ্গে করোনাভাইরাসের কারণে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রমিকরা ছুটি দাবি করছে। এরপরও কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনা মেনে চা-পাতার উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছে হবিগঞ্জের চা-বাগানগুলো।

আকাশে মেঘের আনাগোনা আছে। তবুও হচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। বৃষ্টি হলে গাছে পুরোদমে কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করবে। বড় কুঁড়িগুলো শ্রমিকরা সংগ্রহ করে নিয়ে যায় ফ্যাক্টরিতে। সেখানে প্রক্রিয়াজাত হওয়ার পর বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। 

চা-পাতা দেশের অর্থকরী ফসল। পর্যাপ্ত উৎপাদন হলে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হয় চা-পাতা। প্রতি বছরের ন্যায় এবার উৎপাদন শুরু হয় ১৫ মার্চ থেকে।

দেশের লস্করপুর, সিলেট, জুড়ী, লংলা, মনু-ধলাই, বালিশিরা, চট্টগ্রামসহ সাতটি ভ্যালির প্রায় ১৯০টি বাগানে ব্লাক ও বায়ু টি উৎপাদন হয়। এর মধ্যে পঞ্চগড়ে কাজী অ্যান্ড কাজী বাগানে একমাত্র বায়ু টি উৎপাদন হয়। ব্রিটিশ সরকারের আমল থেকে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট জেলাসহ দেশের অন্যান্য বাগানে ব্লাক টি উৎপাদন হয়। বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে চা-পাতার উৎপাদন সমাপ্ত হয় ডিসেম্বরে।

প্রতি মৌসুমে হবিগঞ্জের বাগানগুলোতে এক কোটি কেজি চা-পাতা উৎপাদন হয়। নতুন করে চারা রোপণ করে চা-পাতার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বাগান কর্তৃপক্ষ নানাভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বৃষ্টির সঙ্গে চা-পাতা উৎপাদনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আবার অতি বৃষ্টি হলে চা-পাতার উৎপাদন ব্যাহত হয়।

হবিগঞ্জের প্রায় ৪১টি বাগানে চা উৎপাদন হয়। লস্করপুর ভ্যালির সভাপতি জেলার চুনারুঘাটের চন্ডিছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি হচ্ছে না। উৎপাদন শুরু হয়েছে। পুরোদমে বৃষ্টি হলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত বৃষ্টিপাত চা-পাতা উৎপাদনে সহায়ক। এর জন্য তাপমাত্রা ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকা জরুরি।

রফিকুল ইসলামের দাবি, চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়াবে না; যদি বহিরাগতরা বাগানে না আসে। কারণ, বাগানে শ্রমিকরা ছাড়া আর কেউ নেই।

শ্রমিকদের নিরাপদ রাখতে বাগানে বহিরাগতদের আসতে নিষেধ করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।

চা বাগানগুলো খোলা রাখার জন্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা চা শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার, তাই করছেন।

আমতলী চা-বাগানের ম্যানেজার সোহেল রানা পাঠান বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে চা-পাতা উৎপাদনের সম্পর্ক। প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় এখন পর্যন্ত পুরোদমে উৎপাদন শুরু করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা বাগানের প্রাণ। তাদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক ও সাবান বিতরণ করা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে তারা শ্রমিকদের পাশে আছেন বলে জানান।

দেউন্দি চা-বাগানের শ্রমিক শান্তি রাণী গৌড় বলেন, বছরের পর বছর গাছ থেকে চা-পাতা সংগ্রহ করছেন। বৃষ্টির পর যে কুঁড়ি বের হয়, তা চকচকে সবুজ থাকে। উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।


ঢাকা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়