ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ব্যাটিং হোক বা বোলিং আক্রমণাত্মক থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ: মিরাজ

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১০ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যাটিং হোক বা বোলিং আক্রমণাত্মক থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ: মিরাজ

ছবি : মিলটন আহমেদ

মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিংয়ে নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করছেন। তার ব্যাট-প্যাডের নিখুঁত রসায়নের খবর সবারই জানা। কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটিংয়েও যে তার হাত পাকা তা জানতেন কম জনই। জানতেন না মিরাজও নিজেও!

এবারের বিপিএল সেই মিরাজকে নিয়ে এসেছে সবার সামনে। খুলনা টাইগার্সের হয়ে ঢাকায় সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে বেশ প্রসংশা কুড়িয়েছেন। সবশেষ কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে খেলেছেন ৩৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস। এছাড়াও রয়েছে আরও কয়েকটা ভালো ইনিংস। সব মিলিয়ে ২২ গজে তার সময়টা কাটছে দারুণ।

বৃহস্পতিবার মিরাজের সঙ্গে একান্ত সময় কাটিয়েছেন রাইজিংবিডি ডটকম -এর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। দীর্ঘ আলাপচারিতায় উঠে এসেছে বিপিএল, পাকিস্তান সফর ও ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা।

খুলনার তো সামনে ডু অর ডাই ম্যাচ - কি ভাবনা?

মিরাজ: অবশ্যই ম্যাচটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচটি যদি জিততে পারি তাহলে নিশ্চিতভাবে কোয়ালিফাই করব। তারপরও আমাদের সামনে বড় সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে পরের ম্যাচটাও যদি জিততে পারি তাহলে সেরা দুইয়ের মধ্যে থাকব। সেরা দুইয়ে থাকতে পারলে ভালো কিছু সুযোগ থাকবে। আমরা একটা একটা ম্যাচ ধরে আগাচ্ছি।

কেমন যাচ্ছে আপনার এবারের আসর?

মিরাজ: ভালো। এবার যদিও বোলিংটা ওরকম করা হচ্ছে না। ব্যাটিংটায় বেশি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাই ব্যাটিংটা ভালো হচ্ছে। আশা করছি ধারাবাহিকতা ধরে রাখার।

শান্তর সঙ্গে ওপেনিং জুটি কেমন উপভোগ করছেন?

মিরাজ: শান্ত আর আমি কিন্তু ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে ক্রিকেট খেলছি। অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে এখন পর্যন্ত খেলছি। ওর সঙ্গে আমার পার্টনারশিপটা খুবই ভালো হয়। যখন আমি অনূর্ধ্ব-১৯ এ খেলেছি তখন ওর সঙ্গেই বেশি ব্যাটিং করেছি। ওর আর আমার যোগাযোগটা খুবই ভালো হয়। ওকে যখন দেখি তখন বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনে হয়। ওর সঙ্গে ব্যাটিং করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। জাতীয় দলে মুশফিক ভাই-র সঙ্গেও আমার জুটি ভালো হয়। বড় বড় যত জুটি আছে সেগুলো মুশফিক ভাই-র সাথেই হয়েছে আমার।

আপনার ওপেনিং নিয়ে যদি কিছু বলতেন?

মিরাজ: যেটা হয়েছে সেটা হল- গত বছর যখন রাজশাহী কিংসে খেলেছি তখন কয়েকটা ম্যাচে ওপেনিং করেছিলাম। মোটামুটি ভালো ব্যাটিংও করেছিলাম। হয়তো ওই আত্মবিশ্বাসের জন্য খুলনার টিম ম্যানেজমেন্ট যারা আছেন বিশেষ করে কোচ সুজন স্যার (খালেদ মাহমুদ)  ও অধিনায়ক (মুশফিকুর রহিম) তারা বিবেচনা করেছে ওপেনিংয়ে আমি গেলে হয়তো ভালো করতে পারব। আমার প্রতি তাদের আত্মবিশ্বাস ছিল। সে জন্য ওপেনিংয়ে পাঠিয়েছে। প্রথম ম্যাচে যদিও আমি ভালো করতে পারিনি। দ্বিতীয় ম্যাচেও সুবিধা করতে পারিনি। তৃতীয় ম্যাচে অনেক ভালো ব্যাটিং হয়েছে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছি। ওইটা থেকে একটা আত্মবিশ্বাস চলে আসে। এখন নিজের ভেতরও একটু প্রশান্তি পাচ্ছি। ভালো লাগছে। বিশ্বাস জন্মেছে যে আমি পারব।

 

 

একটা বিষয় চোখে পড়েছে আপনি তেড়েফুঁড়ে না মেরে যদি ক্রিকেটীয় শট খেলেন তাহলে আপনার ব্যাটিং সৌন্দর্য বেশি ফুটে ওঠে। টি-টোয়েন্টিতে সেই সুযোগটি কম যদিও। কিন্তু টেস্টে বা ওয়ানডেতে তো আছে। আগ্রাসন দেখানো সব সময়ই কি জরুরি?

মিরাজ: আক্রমণাত্মক থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নিজেকে গুটিয়ে রাখেন তাহলে কিন্তু আপনি সাফল্য পাবেন না। আপনি তখনই সাফল্য পাবেন যখন আপনি আক্রমণাত্মক খেলবেন। আপনি কিছু করার চেষ্টা করবেন। তখনই সাফল্যটা আসার সুযোগ বেশি থাকবে। আমি মনে করি আমি যদি গুটিয়ে থাকি, আমি যদি ভয় পাই, নার্ভাস থাকি তাহলে কিন্তু কখনোই ভালো খেলতে পারব না। ক্রিকেটে ঝুঁকি নিতে হয়, সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয়। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হয়।

পাকিস্তান সফর হলে আপনার পরিকল্পনা কি থাকবে?

মিরাজ: পাকিস্তান সফর নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আশা করছি শিগগিরই হয়ে যাবে। সিদ্ধান্ত হলে আমাদের প্রস্তুতি কি হবে সেটা নিয়ে আগাবো। বোর্ড যেটা সিদ্ধান্ত নিবে আমরা সেটাই করব। শেষ পর্যন্ত যদি যাওয়া হয় তাহলে আগের মতোই ইতিবাচক পরিকল্পনা থাকবে। শেষ কয়েক বছর ধরে যেটা করে আসছি তেমনটাই থাকবে। বাড়তি ওইরকম কোনো কিছু না যে এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। সিম্পলের মধ্যে থাকতে হবে। আমার যে ছন্দ আছে সেটার মধ্যে থাকলে আশা করি ভালো হবে।

ভারতের বিরাট কোহলির উইকেট যেমন সবাই চায়, তেমননি পাকিস্তানের বাবর আজমের উইকেটও অরাধ্য। ইচ্ছা আছে কি?

মিরাজ: আসলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিটি উইকেটই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর যারা বড় খেলোয়াড় তাদের উইকেট তো খু্‌বই গুরুত্বপূর্ণ থাকে। একজন বোলার হিসেবে লক্ষ্য থাকে যেকোনো ব্যাটসম্যানকে আউট করা। যত বড় ব্যাটসম্যান হোক না কেন তাকে মোকাবেলা করা। সেই চ্যালেঞ্জটা থাকে। আর এই চ্যালেঞ্জটা নিয়েই সব সময় বল করি। আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো ভালো প্লেয়ারের উইকেট পেয়েছি। টেস্টে, ওয়ানডেতে বলেন। চেষ্টা থাকে ভালো জায়গায় বল করার। লাইন, লেন্থ মেনে বল করার।

হাশিম আমলার সাথে ব্যাটিং নিয়ে কথা হয়েছে? কোনো টেকনিক জানতে পেরেছেন, কোনো পরামর্শ দিয়েছে?

মিরাজ : হাশিম ভাই অত্যন্ত ভালো মানুষ। ওনার সাথে প্রথমবার টিমমেট হিসেবে একসঙ্গে আছি। আমরা তাকে পেয়ে খুবই গর্বিত। হাশিম ভাইর সঙ্গে আমি ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করেছি। তার সঙ্গে ব্যাটিং করে ভালো লেগেছে। উনি আমাকে বলেছেন ক্রিকেট শর্টস খেলতে। আমি যা পারি তার ভেতরেই আমাকে থাকতে বলেছেন এবং বিভিন্ন টিপস দিয়েছেন। যেমন; টি-টোয়েন্টিতে আক্রমণাত্মক থাকাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভালো বল, খারাপ বল সবটাই ভালোভাবে দেখে খেলা গুরুত্বপূর্ণ। এরকম অনেক কথাই বলেছেন।



ঢাকা/আমিনুল/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়