ভোলার পাঁচটি বেইলি ব্রিজ এখন মৃত্যুফাঁদ!
ভোলা সংবাদদাতা : ভোলা-চরফ্যাশন প্রধান সড়কের পাঁচটি বেইলি ব্রিজ এখন মৃত্যুফাঁদ। ছোট-খাটো দুর্ঘটনা তো লেগেই আছে, যে কোন সময়ে ঘটতে পারে বড় কোন অঘটন।
১৯৮৭ সালে নির্মিত ত্রিশ বছরেরও অধিক বয়সের স্টিল কাঠামোর এ ব্রিজগুলো এখন ব্যবহার অনুপযোগী। ভোলা জেলার অভ্যন্তরীন প্রধান সড়কে এসব ব্রিজের অবস্থান হওয়ায় না ব্যবহার করেও উপায় নেই। বাধ্য হয়ে বুকে আতঙ্ক নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে।
সাময়িকভাবে মেরামত করে কোনমতে ব্রিজগুলো সচল রাখা হয়েছে। একটি বাস পার না হওয়া পর্যন্ত অন্য একটি রিকশাও চলতে পারছে না এ ব্রিজে। বর্ষার সময় বেশি আতঙ্কে থাকতে হয় মোটরসাইকেল আরোহীদের। সামান্য এদিক ওদিক হলেই পিছলে যায় মোটরসাইকেল। এমন ঘটনায় অনেকের জীবনহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণের ঘটনাও রয়েছে।
‘পাঁচ টনের অধিক যানবাহন চলাচল নিষেধ’ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েই দায়সারা দায়িত্ব সারছে জেলা সড়ক বিভাগ। কিন্তু বিকল্প কোন উদ্যোগ নিতেও দেখা যাচ্ছেনা। গার্ডার ব্রিজ ছাড়া এই পথ ঝুঁকিমুক্ত ভাবা যাচ্ছেনা মনে করছেন সড়ক বিভাগ সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
শত কিলোমিটার দীর্ঘ ভোলা-চরফ্যাশন প্রধান সড়কের বাংলাবাজার, বকসে আলী, বোরহানউদ্দিন, ডাওরী ও শশীভূষণে এই বেইলি ব্রিজগুলোর অবস্থান। অচিরেই জরাজীর্ণ ব্রিজগুলো ভেঙ্গে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি করেছেন বাস মালিক-শ্রমিক ও যাত্রী সাধারণ।
ভোলায় এখন শিল্পনগরীর কাজ চলায় প্রচুর ওভার লোডের ট্রাক, লরি চলাচল করে। বিশেষ করে ভোলায় অনেকগুলো পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হচ্ছে। তাই বড় বড় যন্ত্রপাতিসহ প্রতিনিয়ত এরকম ১২-১৮ চাকার লরি আসা-যাওয়া করছে। এ ছাড়াও স্থানীয়ভাবে ফলানো ফসল পরিবহনেও এই পথে গাড়ি চলাচল করে প্রায় সারা বছরজুড়েই। এ পর্যন্ত প্রতি বছর কেবল মেরামত করেই দিন যাচ্ছে স্থানীয় সড়ক বিভাগের।
ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৮০-৯০ জন যাত্রী নিয়ে দশ-বারো টনের ৬০টি বাস প্রতিদিন বিশ মিনিট পরপর ভোলা থেকে চরফ্যাশন চলাচল করে। দশ ফুটের চওড়া এই বেইলি ব্রিজে প্রতিনিয়ত কোন না কোন দূর্ঘটনার নজির রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভোলা সড়ক বিভাগের সাথে বার আলোচনা করেও আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তাই এখন আল্লাহপাকের ওপর ভরসা করে চলছি।’
ভূক্তভোগী একজন বাসযাত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত ভোলা টু চরফ্যাশন রুটে বাসে যাতায়াত করি। নড়বড়ে ব্রিজের ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। মনে হয়, যেন বাসটা এখনই মানুষসহ ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে যাবে।’
এ বিষয়ে ভোলা সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক বিভাগ এই ৫টি ব্রিজের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ডিজাইনের কাজ চলছে। আমরা আশা করছি এ বছরের মধ্যে এর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারব।’
রাইজিংবিডি/ভোলা/৩১ মার্চ ২০১৮/ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন