‘মাছের বাক্সে শিশুর লাশ’ রহস্য উদঘাটন
নোয়াখালী প্রতিনিধি : পরিত্যক্ত একটি ঘরের ভেতরে মাছের বাক্সের মধ্যে ৮ বছরের শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ছয়ানী বাজারের একটি ঘর থেকে গত ২৫ আগস্ট লাশটি উদ্ধার করে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। ঘটনার মাত্র ৯দিনের মধ্যেই সূত্র ছাড়া সেই রহস্যের সমাধান করতে পেরেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে খুনের রহস্য উদঘাটনের বর্ণনা দেন।
খুনের শিকার শিশুটির নাম এমরান হোসেন। ছয়ানী ইউনিয়নের ছোট শরীফপুর গ্রামের শামছুল হকের ছেলে সে। ছয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল ছেলেটি। পুলিশ অর্ধগলিত, চেহারা বিকৃত ও গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় শিশুর লাশটি উদ্ধার করে।
পরনের প্যান্টের স্টিকার দেখে নিখোঁজ ছেলের লাশ সনাক্ত করে পরিবার। এ ঘটনায় এমরানের বাবা শামছুল হক বেগমগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে এজহারের ভিত্তিতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, গোপন তথ্যের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি মো.ওয়াসিম আকরামকে (২০) ১ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্থানীয় ছয়ানী বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা রহস্যের জট খোলে। ওয়াসিম বেগমগঞ্জ উপজেলার ৫নং ছয়ানী ইউনিয়নের বড় মেহেদীপুর গ্রামের আব্দুর রহমান মহিনের ছেলে।
গ্রেফতারকৃত ওয়াসিম দোষ স্বীকার করে হত্যার বর্ণনা দেন। তাঁর বর্ণনা মতে, গত ২২ আগস্ট রাত ৮টার দিকে সেসহ ৪ জন মিলে শিশু এমরানকে জোর করে ধরে জনৈক সহিদের পরিত্যক্ত একচালা টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে এমরানের মুখ চেপে ধরে তারা পালাক্রমে বলাৎকার করে। মুখ চেপে ধরায় এক পর্যায়ে শিশুটির মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। সে সময় তারা শিশুটির গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মৃতদেহটি প্লাস্টিকের মাছের বাক্সে ভরে ওই ঘরেই লুকিয়ে রাখে।
ওয়াসিম এই হত্যার দায় স্বীকার করে নোয়াখালী বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোয়েব উদ্দিন খানের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
রাইজিংবিডি/নোয়াখালি/৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/মাওলা সুজন/সনি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন