ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মাস্ক কেলেঙ্কারির হোতাদের খোঁজে মাঠে দুদক

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৭ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
মাস্ক কেলেঙ্কারির হোতাদের খোঁজে মাঠে দুদক

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহৃত এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয় দুর্নীতির হোতাদের ধরতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চার সদস্যের টিম।

স্বাস্থ‌্য সুরক্ষাসামগ্রী দুর্নীতিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কমিশন সংস্থাটির গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালককে প্রধান করে টিম গঠন করার নির্দেশনা দেয়। দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে গঠিত টিমের অন‌্য সদস্যরা হলেন উপ-পরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান।

সোমবার কমিশন থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন। বিষয়টি জানতে টিম প্রধান মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও বক্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে দুদকের জ‌্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, করোনাভাইরাসের মতো পরিস্থিতিতে মাস্ক ও পিপিই ক্রয় দুর্নীতির বিষয়ে দুদক অধিক গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। সেজন্য দুদক গোয়েন্দা বিভাগের একজন পরিচালককে টিম প্রধান করেছে। এর পেছনে যে সিন্ডিকেটই থাকুক না কেন তাদের খুঁজে বের করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এর রহস্য উন্মোচন করে দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, মাস্ক বা পিপিইর মতো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তার সাথে সম্পৃক্ত। তাই এসব অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুত অনুসন্ধান শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এন-৯৫ মাস্কসহ সরকারি ক্রয় বিতরণ খাতে স্বচ্ছ নীতিমালা অনুসরণ করা জরুরি। আমাদের পর্যবেক্ষণ তা হয়নি। যে কারণে মাস্ক ক্রয়ে কেলেঙ্কারি ঘটেছে। সেই কেলেঙ্কারি উদঘাটনে যে কমিটি গঠিত হয়েছে, তার প্রতিবেদন চাপা রাখা হয়েছে। প্রকৃতিক দুর্যোগকে পুঁজি করে পরস্পর যোগসাজশে সম্পদ বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

গত ১০ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে থেকে এক জরুরি বৈঠকে করোনাকালে এম-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ সুরক্ষামূলক সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি-প্রতারণার অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

সূত্র জানায়, মাস্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রথমে স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটার দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে এন-৯৫ এর মোড়কে করে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করে সিএমএসডি কর্তৃপক্ষ। তারা দাবি করে, এন-৯৫ মাস্কের কোনও কার্যাদেশ জেএমআইকে দেয়নি। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। এন-৯৫ মাস্ক এবং পিপিই ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি বা প্রতারণার কিছু অভিযোগ দুদকের হটলাইনে (১০৬) আসে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, সিএমএসডির ৯০০ কোটি টাকার কেনাকাটায় দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা নিয়ে একাধিক গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। ৯০০ কোটি টাকা কেনাকাটার কথা বলা হলেও তার অর্ধেক পরিমাণ টাকার সামগ্রীও কেনা হয়নি। বাড়তি মূল্য দেখিয়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে জোগসাজশে টাকা লোপাট করা হয়েছে।

 

এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়