মাহবুবুল খালিদের গানে বৈসাবির তাৎপর্য (ভিডিও)
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
পাহাড়ে চলছে বৈসাবি উৎসব। ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর বর্ষবরণের উৎসব এটি। যদিও বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে গত বছরের মতো এ বছরও বৈসাবি জৌলুসহীন। করোনামুক্ত পৃথিবীর কামনায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এ উৎসব পালন করছেন ঘরোয়াভাবে।
‘বৈসাবি’ নামটি বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু‘র সম্মিলিত রূপ। নববর্ষ উপলক্ষে ত্রিপুরারা যে উৎসব করে থাকে, তাকে বলে বৈসু কিংবা বৈসুক। মারমাদের অনুষ্ঠানের নাম সাংগ্রাই। আর চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যাদের অনুষ্ঠানের নাম বিজু। এই তিনটি উৎসবের নামের আদ্যাক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ তৈরি হয়েছে।
নৃগোষ্ঠী ভেদে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজনে বৈসাবি উৎযাপন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ফুল দিয়ে ঘর-বাড়ি সাজানো, নদীতে ফুল ভাসিয়ে দেয়া, নদীর তীরে, মন্দিরে, বিশেষ পবিত্র স্থানে ফুল, ধুপ এবং দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, সমাজের বয়োজ্যেষ্ঠদের গোসল করানো, বস্ত্রদান, পিঠা উৎসব, পাঁচন রান্না, খেলাধুলা, পরস্পরের শরীরে পানি ছিটিয়ে দেয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন।
‘বৈসাবি’ উৎসবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এ বিষয়ে একটি গান লিখেছেন স্বনামধন্য গীতিকার ও সুরকার মাহবুবুল খালিদ। বৈসাবি (ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা) শিরোনামের ওই গানটির দুটি ভার্সন রয়েছে। এর একটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন রাজীব ও নন্দিতা। অন্যটিতে রাজীব ও সংগীতা।
চলতি বছর বৈসাবি উপলক্ষে রাজীব ও সংগীতার গাওয়া গানটির একটি মিউজিক ভিডিও ইউটিউবের ‘খালিদ সংগীত’ চ্যানেলে মুক্তি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাজীব ও নন্দিতার গাওয়া ভার্সনটি গীতিকারের নিজস্ব ওয়েবসাইট ‘খালিদ সংগীত’ (www.khalidsangeet.com)-এ অডিও আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মাহবুবুল খালিদ বলেন, মূলত বৈসাবিতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী পুরনো বছরকে বিদায় জানায়। একই সাথে তারা আগামী দিনের সুখ ও সম্পদের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে। বৈসাবি (ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা) গানটিতে এ উৎসবের বিভিন্ন অনুসঙ্গ ও তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি দর্শক-শ্রোতাদের কাছে গানটি ভালো লাগবে। তারা এ গানের মাধ্যমে বৈসাবি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এর পাশাপাশি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের নিয়ে ‘আদিবাসী’ শিরোনামে আরেকটি গান লিখেছেন মাহবুবুল খালিদ। প্রয়াত জনপ্রিয় সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুরে ‘আদিবাসী‘ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন কিশোর, রাজীব এবং টিনা মোস্তারি। এ গানটিও ‘খালিদ সংগীত’ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এই গানে আদিবাসীদের প্রতি সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এর মাধ্যমে আদিবাসীদের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও তাদের সকল অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাহবুবুল এ খালিদের লেখা দিবসভিত্তিক অসংখ্য গান রয়েছে। যেমন বাবা দিবস, মা দিবস, ভালোবাসা দিবস ইত্যাদি। এছাড়া তার জনসচেতনতামূলক গানগুলো ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাস সচেতনতায় লেখা তার গান ‘করোনাকে ভয় করো না’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ঢাকা/অগাস্টিন সুজন
আরো পড়ুন