ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মিয়ানমারে রয়টার্সের সাংবাদিকরা আরো ১৪ দিনের রিমান্ডে

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মিয়ানমারে রয়টার্সের সাংবাদিকরা আরো ১৪ দিনের রিমান্ডে

যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়ির মধ্য থেকে তাকাচ্ছেন সাংবাদিক কিওয়া সো ও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের মধ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষ বুধবার পুলিশি হেফাজতে দ্বিতীয় দফায় আরো ১৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী।

সাংবাদিক ওয়া লোন (৩১) এবং কিওয়া সো ও (২৭) মঙ্গলবার পর্যন্ত দুই সপ্তাহের আটকাবস্থা পূর্ণ করেছেন। সংক্ষিপ্ত শুনানির জন্য বুধবার তাদের ইয়াঙ্গুনের আদালতে আনা হয়। শুনানির পর পরিবার-পরিজন, সহকর্মী ও আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তারের পর এই প্রথম সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হলো তাদের।

রয়টার্সের এই দুই প্রতিবেদক নিশ্চিত করেছেন, পুলিশি হেফাজতে তাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করা হয়নি। শুনানির পর ওয়া লোন বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তিনি আরো বলেন, ‘সবচেয়ে ভালোভাবে আমরা এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করব, কারণ আমরা কোনো ভুল করিনি।’

তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে ওয়া লোন বলেন, ‘আমরা কখনো-ই গণমাধ্যম আইন বা নীতিমালা লঙ্ঘন করিনি। আমরা সবসময় ভালোটা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’

ইয়াঙ্গুনের উত্তরাঞ্চলীয় একটি জেলার আদালতে তাদের আনা হয়। সেখানে তাদের দেখতে কয়েক ডজন গণমাধ্যমকর্মী ও ক্যামেরাম্যান ভিড় করেন। পুলিশের ট্রাকের বদলে তাদের আনা হয় একটি সাদা গাড়িতে। তারা স্বাভাবিক পোশাক পরে ছিলেন এবং তাদের হাতকড়া পরানো ছিল না।

তাদের পক্ষে রয়টার্সের নিযুক্ত আইনজীবী থান জ অং বলেছেন, সাংবাদিক হিসেবে তারা দুজন শুধু তাদের কাজটি করেছেন, কোনো ভুল করেননি।

রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সে ইস্যুতে রয়টার্সের জন্য খবর সংগ্রহ করাকে কেন্দ্র করে মিয়ানমার সরকারের রোষানলে পড়েন এই দুই সাংবাদিক। তাদের বিরুদ্ধে সরকারের গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সরকারের গোপন তথ্য হাতিয়ে তা প্রকাশ করেছেন তারা। দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৪ পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে মিয়ানমারে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের মুখে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ ৫৬ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আবাসন, আবাদি জমিসহ দুই শতাধিক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী তাদের কৃতকর্ম অস্বীকার করে যাচ্ছ। জাতিসংঘ এই বর্বর অভিযানকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছে।

মিয়ানমারে গণমাধ্যমের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধ রয়েছে। বিদেশি গণমাধ্যমকে রাখাইনে প্রবেশে নিষেধ করা হয়েছে। তবে কোনো কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম শর্তসাপেক্ষে অনুমতি নিয়ে রাখাইনে প্রবেশ করতে পেরেছে। তারা যেসব খবর প্রকাশ করেছে এবং তাতে যে বিভৎসতার চিত্র ফুটে উঠেছে, তা দেখে হতবাক হয়েছে বিশ্ববাসী।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স অনলাইন



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ ডিসেম্বর ২০১৭/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়